নিজের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, অনেক কথার মধ্যে অনেক কথা চলে আসে। যদি আমি এমন কোনো কথা বলে থাকি, সেটা ভুল বুঝেছেন, সেটার জন্য আমি দুঃখিত। গত সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী
নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, দয়া করে আপনারা দেশকে অরাজকতার মধ্যে ঠেলবেন না, ইনক্লুডিং সদ্য বিদায় হওয়া পার্টি (আওয়ামী লীগ)। আপনারা পার্টি গোছান। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আপনাদের সাহায্য করবো। আপনারা পার্টি গোছান উইথ নিউ ফেইস (নতুন মুখ নিয়ে), উইথ নিউ অঙ্গীকার এবং আশা করি উইথ থ্রু পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট (রাজনৈতিক আইনের মধ্য দিয়ে)।
গতকাল মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিজিবি সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি ছাত্রদের উদ্দেশে বলব- তোমাদের আন্দোলন কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এই আন্দোলনের তো ইমেজ আছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ খুবই অনুতপ্ত। আমি এখানে (পিলখানা) আসার সময়ও দেখলাম পুলিশের সঙ্গে ছাত্ররা কাজ করছে। পুলিশকে যারা দানব বানিয়েছে, তাদের অবশ্যই বিচার হবে। একটু সবুর করেন। সরকারি অ্যাকশন নিতে গেলে অনেক প্রসেস আছে। সুতরাং ধৈর্য ধরতে হবে। পুলিশের যোগদান সম্পর্কে তিনি বলেন, সবাই যোগ দিচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বলতে পারব কয়জন আসছে, কয়জন আসেনি। আর আপনারা তো দেখছেন পুলিশ আমার সঙ্গে আছে। ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে সরকারি নীতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই পুলিশ কমিশন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। কমিশন হয়ে গেলে সেই নিয়মে পুলিশ চলবে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ আমাকে বলেছে, এই ইউনিফর্ম পরে একদিনও বের হতে চাই না। আমি বলেছি, এটার জন্য তো সময় লাগবে। যারা ছাত্র, কোটার আন্দোলনের মধ্যে ছিলেন তাদের বলছি, আপনারা ডিজাইন, ব্যাচ নিয়ে আসেন। আমরা যতো দ্রুত সম্ভব ইউনিফর্ম চেঞ্জ করতে চাই। এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশরা ভবিষ্যতে যেন মানবিক পুলিশ হয় সে জন্য আমরা পুলিশ কমিশন গঠনের চিন্তাভাবনা করছি। পুলিশ সদস্যরাও বলেছেন, পুলিশ কমিশনের অধীনে তারা থাকতে চাই। রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার হতে চাই না। ১৫ আগস্ট ছুটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখনই আমি বলতে পারব না। আজ বিকেলে আমরা বসব, সেখানে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। যেটা হয় আমরা নির্ধারণ করব। সেদিন প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। কেউ যাতে কোনো ধরনের গ-গোল করতে না পারে।
পুলিশকে যারা দানব বানিয়েছে, তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে নেবো: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
পুলিশকে যারা দানব বানিয়েছে তাদের আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাবেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্র্বতী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের খোঁজ-খবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা ইন্সটিটিউশন ধ্বংস করেছে। বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও র?্যাবের মতো ন্যাশনাল ফোর্সকে দানব বানিয়েছে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক পুলিশকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পুলিশ নিজেরা বলেছে, আমরা লজ্জিত। আমার সঙ্গে এই কয়দিন লম্বা নেগোসিয়েশন হয়েছে। ওরা বলেছে-আমরা ওই পথে যাইনি দেখে আমাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’ বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,
‘আমি চেষ্টা করবো, বিচার পাইয়ে দেওয়ার। আমরা কিছু কিছু পদক্ষেপে নিয়েছি। অ্যাকশন নেওয়ার জন্য একটা সরকারি প্রসেস আছে, যেগুলো টপাটপ করা যায় না। সেই প্রসেসের মাঝে কাজ হচ্ছে।’ ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে কিছু রেকমেন্ডেশন চলে গেছে উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে নিকটস্থ থানায় লুট হওয়া অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
সীমান্তে বিজিবি আর পিঠ দেখাবে না
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উদ্দেশ্যে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বর্ডারের ভেতরে ঢুকে আমাদের মেরে যেতে ওরা। আর ফ্ল্যাগ মিটিং করে বলা হতো, সব ঠিক হয়ে গেছে। আমি বিজিবিকে বলেছি, পিঠ দেখাবেন না। এনাফ ইজ এনাফ। আর নয়।’ গতকাল মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে পিলখানার বিজিবি সদর দফতর পরিদর্শন শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। সেখানে তিনি বিজিবি হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আহত বিজিবি সদস্যদের এবং চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার বিষয়েও খোঁজ খবর নেন।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ রকম একটা ফোর্সকে (বিজিবি) দানব বানানো হয়েছে। শুধু বিজিবি না, পুলিশ, র্যাব, আনসারকেও দানব বানানো হয়েছে। অথচ এগুলো কারো ব্যক্তিগত ফোর্স না। এগুলো জাতীয় ফোর্স। আমি যতদিন আছি ততদিন জাস্টিস রক্ষা করে যাব।
অনেক পুলিশকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ নিজেরা বলেছে, আমরা লজ্জিত। আমার সাথে এই কয়দিন লম্বা নেগোসিয়েশন হয়েছে… ওরা বলেছে, আমরা ওই পথে যাই নাই দেখে আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছেৃ অন্যায়ভাবে বের করে দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি চেষ্টা করব, বিচার পাইয়ে দেয়ার। আমরা কিছু কিছু পদক্ষেপে নিয়েছি। অ্যাকশন নেয়ার জন্য একটা সরকারি প্রসেস আছে, যেগুলো টপাটপ করা যায় না। সেই প্রসেসের মাঝে কাজ হচ্ছে। রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের কিছু রেকমেন্ডেশন চলে গেছে।’ এসময় আগামী বৃহস্পতিবারের মাঝে নিকটস্থ থানায় লুট হওয়া অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।