শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১৬ অপরাহ্ন

বন্যাদুর্গত এলাকায় তরুণ আলেম চেয়ারম্যানের ভূমিকা অবিস্মরণীয়

কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

লক্ষ্মীপুরের বন্যা কবলিত এলাকা কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা ইউনিয়ন। জেলার সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত ওই এলাকা। এখানকার উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যান এক পরিবারের বাপ বেটা দুজন। বাপ উপজেলা চেয়ারম্যান,ছেলে ইউপি চেয়ারম্যান। এ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি শুরু থেকেই এখন পর্যন্ত বাপ বেটার নেতৃত্বে গোটা ইউনিয়নকে বেস্টিত করে রাখেন। তাদের সাথে যোগ দেন একঝাঁক তরুণ আলেম ও অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী যুবকরা। সবাই নিজ উদ্যোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন মানবতার সেবায়। বিশেষ করে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত চরকাদিরা ইউনিয়নকে ওয়ার্ড ভিক্তিক ভাগ করে বিভিন্ন টিমের মাধ্যমে বন্যাকবলিতদের আশ্রয়, নিরাপত্তা, খাবার ও ত্রাণ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন তারা। আর এসব ত্রাণ সামগ্রি ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন চরকাদিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তরুন আলেম মুফতী নুরুল্লাহ খালিদ। তার বাবা মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনিও এ ইউনিয়নের সাবেক দুইবারের ইউপি চেয়ারম্যান থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে বাপ বেটা বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ ইবাদত মনে করে রাত দিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের এমন কর্মকান্ডে গোটা ইউনিয়নবাসীর মনে সাড়া জাগিয়েছেন। এ দুর্যোগ মুহুর্তে দুজন আলেম চেয়ারম্যান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে জনগণের মনিকোঠায় এমনটাই বলছেন স্থানীয়রা। অতিতেও এ দুজন আলেম জনগণের পক্ষে কাজ করাই চরকাদিরা ও কমলনগর উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ বিপুল ভোটের মাধ্যমে তাদেরকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। তাদের সাথে প্রার্থী হয়ে অনেক হেভিওয়েট নেতাকে পরাজিত হতে হয়েছে। সবার মুখে মুখে মুফতি নুরুল্লাহ খালিদ। একজন তরুন আলেম একদিকে মাদরাসার শিক্ষক, অন্যদিকে ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে বন্যাকবলিত এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে আঁকড়ে ধরে রেখেছেন। শুধু আশ্রয়ই নয়; এসব বানভাসিদের বিনামূল্যে খাবার জোগাড় করছেন তারা। তাদের বাড়ীর দরজার মাদরাসা থেকে রান্নাবান্না ও ত্রাণ সামগ্রি প্যাকেট করে নিয়ে যাচ্ছেন আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন ক্যাম্পে। খাবারের জোগান প্রথমে তাদের ব্যক্তিগত ফান্ড থেকে দিয়েছেন। পরে আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন সহ ঢাকা,চট্টগ্রাম কুমিল্লা ও চাঁদপুর থেকে তাদের বন্ধু, সহকর্মীরা বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে যে যতটুকু পারছেন, সহায়তা করে যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনও মাঝেমধ্যে এসে তাদের দেখভাল করছেন। নুরুল্লাহ খালিদের সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ও কর্মী বাহিনী দেখে সবাই তার মাধ্যমে এসব ত্রাণ বিতরণ করতে আগ্রহী হয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ত্রাণ গুলো তাদের জিম্মায় দিয়ে যাচ্ছেন সবাই। প্রতিদিন মুফতী নুরুল্লাহ খালিদের নেতৃত্বে এক ঝাঁক তরুন আলেম ও তার বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহর নেতৃত্বে আরেক ঝাঁক আলেম ছুটে যাচ্ছে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে। পাশাপাশি ওই এলাকার সামাজিক গন্যমান্য ও তরুন যুবকদেরকে টিমওয়ার্ক করে তাদের মাধ্যমেও এসব ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করছেন। এতে বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষগুলোর কষ্ট অনেকটা মুছে যাচ্ছে। আলেম চেয়ারম্যান পরিবারটি কমলনগর উপজেলার মধ্যে নামকরা পরিবার। ফজুমিয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ী ডাঃ শামসুদ্দিন মুরাদ বলেন, ত্রাণগুলো বিচ্ছিন্ন ভাবে দিলে কোন উপকারে আসতো না। চেয়ারম্যান হুজুরদের মাধ্যমে দেওয়ায় ধারাবাহিক ভাবে সবাই পাচ্ছে। এছাড়া তারা যে পরিমাণ পানিতে নিমে কষ্ট করছে, অন্য কেউ হলে এমন করতো না। মুফতী নুরুল্লাহ খালিদ বলেন,এ জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত আমার চরকাদিরা ইউনিয়ন। এ অঞ্চলের মানুষ আমাদেরকে অন্তর থেকে মহব্বত করেন। তাই এ ইউনিয়নবাসীর খবর রাখা আমার দায়িত্বে পড়ে। তাছাড়া আমি বা আমার বাবা যাহা করতেছি,সবগুলো আমরা ইবাদতের নিয়তেই করছি। অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com