সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন

মুন্সীগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাস্টার ট্রেনার মুফতি সারওয়ারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে স্মারকলিপি

হুমায়ন কবীর মুন্সিগঞ্জ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে সরকারি ভাবে জাতীয় পর্যায়ে বহু ধর্মীয় কাজ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই ফাউন্ডেশনের অধীনে গণশিক্ষা ও এবতেদায়ী শিক্ষার একটি কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যার মুন্সীগঞ্জ শাখার দায়ীত্বশীল হলেন মুফতি সরোয়ার নামে একজন ব্যক্তি। তিনি গত ১৭ বছর আওয়ামীলীগের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ইমাম ও জনগণের উপর জুলুম, শোষণ ও অন্যায়ের একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। তার এই জুলম, শোষণ ও সুদ ঘুষের ফিরিস্তি অনেক
দীর্ঘদিন ধরে। এই জেলায় মোট ৮২০ জন ইমাম গণশিক্ষার সাথে যুক্ত। মুফতি সরোয়ার আলেম-ওলামা ও ইমাম সাহেবদেরকে গণশিক্ষার কেন্দ্র দেওয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্র বাবদ সর্বনিম্ন বিশ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে কেন্দ্র দিয়েছেন।এবং পরবর্তীতে এই কেন্দ্র নবায়নের নাম করে সর্বনিম্ন৩ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। প্রতি রোজার ঈদে যাকাত কালেকশন করার জন্য ইমাম সাহেবগণকে বাধ্য করে থাকেন। প্রত্যেকেই সর্বনিম্ন ১ হাজার থেকে ১০ হাজার বা তার চেয়েও অধিক
টাকা কালেকশন করে দিতে হয়। যদি কেউ না দেয় তবে তাকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হয়। অনুরূপ কুরবানীর ঈদেও কুরবানীর চামড়ার মূল্য বাবদ ইমামগণ এর কাছ থেকে সর্বনিম্ন ১ হাজার টাকা বাধ্যতামূলক নেওয়া হয়। এছাড়াও মডেল মসজিদে ইমাম নিয়োগের নামে সরোয়ার সাহেব আড়াই লক্ষ টাকা ও মুয়াজ্জিন নিয়োগের নামে এক লক্ষ টাকা করে অনেকের কাছ থেকে নিয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ কাটাখালি বাজাের্ ৩৯ নং বাড়িতে সুফিয়া নাহা নামে তার একটি মহিলা মাদরাসা রয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য ইমাম সাহেবদের মাধ্যমে বাধ্যতামূলক টাকা কালেকশন করিয়ে সেই টাকা নিজে আর্থসাৎ করেন। তিনি ইমাম সাহেবদেরকে দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে ছাতী কালেকশন, মাদরাসার বার্ষিক খতমে বোখারীর অনুষ্ঠানের জন্য প্রতি ইমাম সর্বনিম্ন এক থেকে ৩ হাজার টাকা বাধ্যতামূলক প্রদান করতে হয়। এসকল কাজ দলীয় ক্ষমতা ও হুমকির মাধ্যমে তিনি বাস্তবায়ন করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তার কেন্দ্রের নাম তালিকা থেকে কেটে দিয়ে পুলিশি হয়রানি করেছেন। কেয়ারটেকার নিয়োগের ক্ষেত্রেও ঘুস নিয়ে সার্কুলার বহির্ভূত লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সে সময়ে তার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয় যা গোপনে লোক মারফত সরিয়ে ফেলে। তৎসময়ে তার সকল অনৈতিক কাজ ইমাম সাহেবগণ সহ্য করেছেন কেন্দ্র ঠিক রাখার জন্য। এত দিন কেউ কোন প্রতিবাদ করতে পারেননি। তার যৌন অত্যাচারের স্বীকার মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা তার ক্ষমতার প্রভাবে কেউ প্রতিবাদ করতে পারিনি। যে প্রতিবাদ করতে গেছে তাকে সে দলীয় গুন্ডা ও পুলিশ দিয়ে হুমকি দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ভুক্তভোগী সকল অভিভাবক প্রতিবাদ করার সাহস পেয়েছে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ছাত্রজনতাকে বিষয়টি অবগত করায়। পরে মঙ্গলবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা ও আলেম-ওলামারগন মুন্সীগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঐ অসাধু কর্মকর্তা মুফতি সরোয়ারকে চাকুরীচ্যুত ও তার নিজ নামের প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। তাদের দাবী যদি তাকে দ্রুত অপসারণ করা না হয়, তবে ছাত্র-জনতা তার বিরোদ্ধে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হেড অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। তার বিরোদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামার এই অভ্যুত্থান সমুন্নত রাখবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com