অনেক ক্ষেত্রেই ডেঙ্গুর কারণে শরীরে র্যাশ দেখা যায়। তবে ডেঙ্গুর অন্যান্য লক্ষণ ও উপসর্গের মধ্যে এটাকে সাইড সিমটম বা পার্শ্ব লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়।
প্রথম ধাপের র্যাশ: ত্বকের এই লক্ষণগুলো দু-তিন রকমের হতে পারে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে মুখ, গলাসহ বুকের ওপরের অংশ লাল হয়ে যেতে পারে।
ভাইরাস ও রক্তের অ্যান্টিবডির সঙ্গে রি-অ্যাকশনের কারণে সাধারণত এমনটা ঘটে থাকে। এর পরবর্তী পর্যায়ে প্রধানত হাত ও পায়ের পাতায় লালচে দাগের মতো হয়, যেগুলো গুটি আকারেও দেখা দেয়। এগুলোকে ‘ম্যাকুলোপ্যাপুলার র্যাশ’ বলা হয়। এগুলো ধীরে ধীরে শরীরের অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তবে হাতের তালু ও পায়ের তলায় এই র্যাশ কখনোই হতে দেখা যায় না। এ ধরনের র্যাশে প্রায় সময়ই বেশ চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হয়।
হেমোরেজিক ডেঙ্গুতে পেটেকিয়াল র্যাশ: ডেঙ্গুতে আরেক ধরনের র্যাশ দেখা যায়, যাকে ‘পেটেকিয়াল র্যাশ’ বলা হয়। এতে চামড়ার তলায় প্রথমে গাঢ় লাল, তারপর ধীরে ধীরে কালচে হয়ে যাওয়া র্যাশ হতে দেখা যায়।
এটা হেমোরেজিক ডেঙ্গুতে হয়ে থাকে এবং চামড়ার নিচে ব্লিডিং হওয়ার কারণেই এটা ঘটে থাকে। তবে ত্বকের লক্ষণগুলো যে ধরনেরই হোক না কেন, ডেঙ্গুর উপশমের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের এই লক্ষণগুলোরও উন্নতি ঘটতে থাকে। বিপরীতভাবে ডেঙ্গুর অবনতি ঘটলে ত্বকের লক্ষণগুলোও বাড়তে দেখা যায় এবং হেমোরেজিক ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে এই কথাটি বেশি প্রযোজ্য।
যেহেতু ত্বকের র্যাশে বেশ চুলকানি থাকে, তাই এসব ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিহিস্টামিনজাতীয় ওষুধ নির্বিঘেœ প্রয়োগ করা যায়। কিছু ক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার ওষুধের সঙ্গে অ্যান্টিহিস্টামিনজাতীয় স্থানিক প্রয়োগের ওষুধ ক্রিম আকারে আক্রান্ত স্থানে সরাসরি প্রয়োগ করলেও ভালো ফল পাওয়া যায়।
যেহেতু মশার কামড় থেকেই ডেঙ্গুর উৎপত্তি, তাই মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়াই যে সর্বপ্রথম করণীয় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
নিরাপদ থাকতে ক্রিমের ব্যবহার: ঘুমানোর সময়ে মশারি টানানো যেমন অত্যাবশ্যক, তেমনি অন্যান্য সময় ত্বকে মসকিউটো রিপেলেন্ট ক্রিম ব্যবহারও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘকালীন প্রতিরক্ষা না দিলেও এই ক্রিমগুলো বেশ কিছুক্ষণ ত্বককে মশার কামড় থেকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম। শিশুদের জন্যও এই ক্রিমগুলো নিরাপদ। তবে হাতে লাগানোর পর যাতে হাতের মাধ্যমে মুখের ভেতর না চলে যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা প্রয়োজন, বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সতর্কতার প্রয়োজন বেশি। পরামর্শ দিয়েছেন : ডা. যাকিয়া মাহফুজা যাকারিয়া, সিনিয়র কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজি,উত্তরা স্কিন কেয়ার অ্যান্ড লেজার,সাবেক কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজিস্ট, ঢাকা শিশু হাসপাতাল