ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেছেন, ইতালি বাংলাদেশের পুলিশ সংস্কারে সহায়তা এবং দেশটিতে আনুষ্ঠানিক অভিবাসনের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে। গতকাল বুধবার তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক সৌজন্য সাক্ষাতকালে রাষ্ট্রদূত এ মন্তব্য করেন।
আলোচনায় ইতালিতে নিরাপদ, সংগঠিত ও নিয়মিত অভিবাসন, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা এবং পুলিশ সংস্কার প্রাধান্য পেয়েছে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টা ও ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির মধ্যে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে এ সাক্ষাত হলো।
জাতিসংঘের বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে বড় আকারে আনুষ্ঠানিক অভিবাসনের আহ্বান জানান। মেলোনি বলেন, উভয় দেশেরই অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে জোর প্রচেষ্টা চালানো উচিত। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের অভিবাসীদের রক্ষা করতে চাই। আমাদের আরও উন্নত নিয়মিত অভিবাসনের জন্য কাজ করতে হবে।’
ইতালির রাষ্ট্রদূত অন্তর্র্বতী সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণসহ পুলিশ সংস্কারে ইতালির সহায়তার প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশ বেশ কয়েকটি দেশে এ সহায়তা দিয়ে থাকে।’ রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ‘শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে’। তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি জানান, ইতালি দূতাবাসও শীঘ্রই একটি চলচ্চিত্র উৎসব ও একটি ব্যালে অনুষঠানের আয়োজন করবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সংলাপ শনিবার: আগামী শনিবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ফের বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এ বৈঠকে সংস্কার কমিশনের কাজের অগ্রগতি অবহিত করা ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা ও পরামর্শ নেয়া হবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ৮ই আগস্ট অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠিত হওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। আগামী শনিবার থেকে ফের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় শফিকুল আলম জানান, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সংস্কার কমিশনগুলো পূর্ণাঙ্গ করা হবে। ইতোমধ্যে কমিশনগুলোর প্রধানরা কাজ শুরু করেছেন। টার্মস অব রেফারেন্স ঠিক হয়ে আছে। তাদের জন্য অফিস খোঁজা হচ্ছে। যারা যারা কমিশনের মেম্বার হবেন, সেক্ষেত্রে তাদের সম্মতি লাগে, এখন তাদের সম্মতি নেয়া হচ্ছে। কোন কোন দলকে দাওয়াত দেয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা নির্ভর করছে প্রধান উপদেষ্টার উপর। পুরোটাই উপদেষ্টামণ্ডলী ডিসাইড করবেন। আমি যতটুকু জেনেছি যে, প্রধান প্রধান দলগুলোকে দাওয়াত দেয়া হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ বিপ্লবকে রিপ্রেজেন্ট করে। তারা জনগণের সরকার। এ সময় পার্বত্য এলাকায় সহিংসতার প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, আমি মনে করি না সিএইচটিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। বাঙালি একজন টিচারকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। সে নিয়ে কিছু টেনশন হয়েছিল। আজকে পরিস্থিতি অনেকটা বেটার। খাগড়াছড়িতে হয়েছে। বাকি পার্বত্য চট্টগ্রাম অনেক বড়। এখানে রাঙ্গামাটি জেলা আছে, বান্দরবান জেলা আছে।