বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
উলিপুরে জাতীয় ফুল শাপলার আদলে ধানক্ষেত বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় ও সাহসী, সকলকে ধৈর্যের সাথে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে-জেলা প্রশাসক পটুয়াখালী কমলগঞ্জে সীমানা পিলার উপরে ফেলে ভূমি জবরদখল করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা হলো জামায়াতের সাত শহীদের জন্মভূমি-অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে সচেতনতা সভা পাবনায় র‌্যাবের অভিযানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলার ২ আসামী গ্রেফতার নোয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এম এ ফয়েজের বিদায় সংবর্ধনা বাগেরহাট প্রেস ক্লাবকে সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য দূর করতে হবে-বিশেষ সাধারণ সভায় বক্তারা নেত্রকোনায় বন্যায় জনজীবন বিপর্যস্ত পটুয়াখালীতে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গোল টেবিল বৈঠক

মনকে ঔপনিবেসিকতার শিকল থেকে মুক্ত করতেই হবে

ড. মুহাম্মাদ আব্দুল বারী 
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪

বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্জাগরণ 
ভূমিকা: বিগত কয়েকটি শতাব্দীজুড়ে বাংলাদেশ ঔপনিবেসিক পরাশক্তির মাধ্যমেই শাসিত হয়েছে। বৃহত্তর বাংলা ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্তবৃটিশদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। বৃটিশ ঔপনিবেসিক শাসন বাংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনে একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে যায়। বৃটিশ শাসনের অবসান ঘটলেও ঔপনিবেসিক ঐ শাসনের উত্তরাধিকার আজও সমসাময়িক চ্যালেঞ্জসমূহ ও মানসিকতাকে প্রভাবিত করে চলেছে।
এই চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে আছে ১৯৪৭-পরবর্তী পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক এবং অন্যায্য রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আচরণ- যা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম সামরিক অভিযান এবং পরবর্তীতে ভারতীয় শাসকমহলের শাসকগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এ ঘটনাগুলো এ অ লের মানুষের মানসিকতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশের মানুষকে বোঝার জন্য এই অ লেবৃটিশ শাসনের প্রভাব এবং ঔপনিবেশিক-পরবর্তী দুর্বলতা মোকাবেলা নিয়ে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার: বর্তমানে আমরা যে ভূখন্ডকে বাংলাদেশ হিসেবে জানি তা অকল্পনীয়শোষণ এবং সমাজের পদ্ধতিগত ধ্বংসাত্মক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এ জায়গায় এসেছে। রাজনৈতিকভাবে, ঔপনিবেশিকতা এমন একটি শাসনব্যবস্থা আরোপ করেছিল যা স্থানীয় উন্নয়নের পরিবর্তেবরং সম্পদ আহরণ এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার জন্যই প্রনীত হয়েছিল। বৃটিশদের হাত দিয়েই এ অ লে জমিদারি ব্যবস্থার প্রবর্তন হয় যা প্রকারান্তরেএখানে সামন্ততান্ত্রিক প্রথার উত্থান ঘটায়। ফলশ্রুতিতে, এক শ্রেণীর জমিদার তৈরি হয় যারা ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুগত ছিল এবং একইসাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষকদের জন্য ভীষণ রকম অত্যাচারী ছিল।
যদিও বৃটিশ রাজের শেষের দিকে জমিদারি ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছিল, তবে এই ব্যবস্থার প্রভাবে এরই মধ্যে সামাজিক বৈষম্য অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল এবং জনগণের মধ্যেও দীর্ঘস্থায়ী অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল।শুধুমাত্র অর্থনীতির কথাই যদি বলতে হয়, বাংলাদেশ একটি সময়ে টেক্সটাইল বা এ ধরনের স্থানীয় বেশ কিছু শিল্পে সমৃদ্ধ ছিল। অথচ কালক্রমে এই অ লকেই বৃটিশ কারখানার কাঁচামালের উৎসে পরিণত করা হয়। পাশাপাশি, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এমন কিছু নীতি ও কৌশল প্রনয়ন করা হয় যার ফলশ্রুতিতে মসলিন শিল্পের মতো সমৃদ্ধ শিল্পও ধ্বংস হয়ে যায় এবংএ অ লে ব্যাপক দারিদ্র্যের বিস্তৃতি ঘটে। এই সংকটগুলো আজও বাংলাদেশকে তাড়া করে ফিরছে।
অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য শস্যের পরিবর্তেএ অ লে জোরপূর্বক নীল চাষ শুরু করা হয়। এর জেরে এখানে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যাতে কয়েক লাখ লোক মারা যায়। সাংস্কৃতিকভাবেও ঔপনিবেশিকতার গুরুতর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।বৃটিশরা তাদের মতো করেই একটি সভ্যতা বিনির্মাণের উদ্দেশ্যে পশ্চিমা শিক্ষা এবং মূল্যবোধ চাপিয়ে দেয়। উদ্দেশ্য ছিল, রক্তে বা গায়ের রংয়ে ভারতীয় হলেওস্বাদে, মত গঠনে, নৈতিকতায় এবং বুদ্ধিতে যেন এখানকার মানুষ ইংরেজসদৃশ হয়ে যায়। উদ্দেশ্যমূলক এই শিক্ষা ব্যবস্থা এ অ লের জ্ঞানার্জন প্রক্রিয়া এবং সাংস্কৃতিক চর্চাকে মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন ও ধ্বংস করেছে। তাছাড়া এর প্রভাবে একটি সাংস্কৃতিক শ্রেণিবিভাজনওতৈরি করা হয়েছিল যেখানে স্থানীয় ঐতিহ্যের তুলনায় পশ্চিমা রীতিনীতি অধিকতর মুল্যায়ন পায়। এ ধরনের বিভাজন স্থানীয় সংস্কৃতির ধারক ও বাহকদের মধ্যেও হীণমন্যতাবোধ তৈরি করে। ঔপনিবেসিকতার প্রভাবেই বাঙ্গালী সমাজে বৃটিশ শিক্ষায় শিক্ষিত একটি অভিজাত শ্রেনীর জন্ম হয় যাদের বেশিরভাগই জনসাধারণ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। ফলত, সামাজিক বিভাজন আরো বেশি বিস্তৃত ও প্রকট আকার ধারন করে।
মনকে ঔপনিবেসিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত করা:ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা, কাঠামো এবং সম্পর্কগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি এগুলোকে যদি চ্যালেঞ্জ করতে হয় তাহলে সর্বাগ্রে মনকে ঔপনিবেসিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। এমনটা করতে হলে মনকে সৃজনশীল ও উন্নত সুচিন্তায় পরিপূর্ণ করতে হবে। তবে তার আগে মন থেকে দূষিত ও কলূষিত সব পদ্ধতিগত আবর্জনা দূর করে মনকে খালি করা জরুরি। কেনিয়ার প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, লেখক এবং পন্ডিত এনগুগি ওয়া থইনগো তার বিখ্যাত বই‘ডিকলোনাইজিং দ্য মাইন্ড: দ্য পলিটিক্স অফ ল্যাংগুয়েজ ইন আফ্রিকান লিটারেচারে’ জনগণের ওপর পূর্ববর্তী ঔপনিবেসিক শাসনের মানসিক, সাংস্কৃতিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ এবং ধ্বংস করার কথা বলেছেন। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে যেসব বিষয় রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো প্রভাবশালী ঔপনিবেসিক বয়াণ, তত্ত্ব ও মূল্যবোধগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রতিরোধ করা যেগুলো জোর করে স্থানীয় মানুষগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদি ঔপনিবেসিক এই বয়াণ ও কাঠামোগুলো ধ্বংস করা যায় তাহলে ঔপনিবেসিকতার জাঁতাকালে পিষ্ট স্থানীয় ভাষা, জ্ঞান এবং সংস্কৃতিগুলোকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
উন্মুক্ত এবং উচ্চাভিলাষী মন তৈরি করা: ঔপনিবেশিকতা থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়াটি এক ধরনের পরিচ্ছন্নতা অভিযান যার মাধ্যমে মানুষকে অপমানজনক ও নিপীড়নমূলক অতীতের দু:সহ যাতনা থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় একদিকে যেমন অতীতের সর্বোত্তম বিষয়গুলো ধারণ করা হয় অন্যদিকে আবার বর্তমানের উন্নত, ন্যায়নিষ্ঠ ও কল্যাণকর কাজগুলোও অব্যহত রাখা হয়। এর মধ্য দিয়ে সমাজকে বর্তমান ও আগামীর জন্য শক্তিশালী রূপে গড়ে তোলা যায়। বাংলাদেশের মানুষ যেহেতু ঐতিহাসিকভাবেই নির্যাতিত হয়ে এসেছে তাই এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদি ভাষা, পরিচয় সত্ত্বা ও অনুশীলনগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য ঔপনিবেসিকতার প্রভাব থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়াটি বহুমুখী প্রকল্পের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে। গোটা বিশ^ যেখানে গভীর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেখানেউন্মুক্ত এবং উচ্চাভিলাষী মানসিকতার বিকাশে সৃজনশীল কর্মকান্ডগুলোকে প্রণোদণা দেওয়া জরুরি। বাংলাদেশের মানুষদেরকে পুরনো সব শৃংখল থেকে মুক্ত হয়ে আধুনিক সময়ের সফলতা অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে। এ জন্য নি¤েœাক্ত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি:
শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠন:ঔপনিবেশিক ইতিহাসের সমালোচনা, স্থানীয় বীরদের অবদান এবং প্রতিরোধ আন্দোলনগুলো তুলে ধরা; প্রশ্ন করাকে উৎসাহিত করা এবং ভারসাম্যপূর্ণবিশ্লেষণ করার সুযোগ রেখে শিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীরা সামাজিকতা সংক্রান্ত, জীবনযাপন বিষয়ক এবং উদ্যোক্তা বিষয়ক দক্ষতাগুলো অর্জন করতে পারে।
স্থানীয় জ্ঞানকাঠামো পুনরুদ্ধার করা: স্থানীয়ঔষুধ, কৃষি এবং কারুশিল্পের প্রাক-ঔপনিবেশিক সমৃদ্ধ ঐতিহ্যকে স্বীকৃতি এবং মূল্যায়ন করতে হবে যাতে ভবিষ্যত প্রজন্ম তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যথেকে শিখতে পারে এবং পশ্চিমাদের কাছে গিয়ে নিজেদের নিয়ে হীনমন্যতায় না ভোগে।
রাজনৈতিক স্বায়ত্তশাসনকে উৎসাহিত করা: এমন এক ধরনের রাজনীতি ও শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা সত্যিকার অর্থে জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং একইসাথে যা স্থানীয় ইনসাফ ও গনতন্ত্রের অনুশীলনের সাথে ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। এরকম একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চালু করতে পারলে পূর্ববর্তী ঔপনিবেশিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির প্রভাব কমে আসবে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের অংশগ্রহণ বাড়বে এবং জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে।
সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের অগ্রগতি: বাংলাসহ স্থানীয় অন্যান্য ভাষার প্রচার ও প্রসারের মাধমে বৈচিত্রময় সংস্কৃতির অনুশীলন যেমন বৃদ্ধি করতে হবে তেমনি অন্যান্য ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতিও শ্রদ্ধাশীল মনোভাবও সৃষ্টি করা হবে। জাতীয় পরিচয়সত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে হীনমন্যতা নয় বরং আত্মবিশ^াসী হতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
অর্থনৈতিক বৈষম্য মোকাবেলা করা: একটি স্বনির্ভর অর্থনীতি তৈরি করতে হবে। ভূমি সংস্কার, স্থানীয় শিল্পের বিকাশ এবং বিদেশী আমদানি ও অনুদানের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার মাধ্যমে একটি স্বনির্ভর অর্থনীতি তৈরি করতে হবে। এমনটা করা সম্ভব হলে নাগরিকেরাও কর্পোরেট লোভ থেকে অনেকটা মুক্ত থাকতে পারবে।
উপসংহার: ঔপনিবেশিক শাসনে বাংলাদেশের দীর্ঘ দুর্ভোগ এবং পরবর্তী দশকের ব্যর্থতা এ ভূখন্ডের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে গভীর প্রভাব রেখেছে। তাই ঔপনিবেসিকতা থেকে মুক্ত করার প্রক্রিয়াটি এমনভাবে করা উচিত যাতে পুরনো সংকট থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় এবং ফেলে আসা উত্তম বিষয়গুলো আবার পুনরুদ্ধারও করা সম্ভব হয়। পশ্চিমা সভ্যতা থেকে ইতিবাচক বিষয়গুলো গ্রহণ করার পাশাপাশি স্থানীয় জ্ঞানকাঠামোগুলো পুনরুদ্ধার করার মাধ্যমে বাংলাদেশ আবারও উন্নত একটি অবস্থানে চলে যেতে পারে। এমনটা করার জন্য প্রাথমিকভাবে চাই একটি উদার ও খোলা মন। বলা হয়ে থাকে যে, “মানুষের মন একটি প্যারাসুটের মতো। এটি তখনই কাজ করে যখন তা উম্মুক্ত থাকে।” বাংলাদেশের তরুণ এবং প্রাণবন্ত প্রজন্ম যারা অতি সম্প্রতি দীর্ঘদিন ধরে চেপে বসা একটি পারিরারিক স্বেচ্ছাচারিতাকে উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছে তারা আমাদের সামনে সম্ভাবনার দুয়ার উম্মুক্ত করেছে। তাই বাংলাদেশকে একটি ন্যায়সঙ্গত এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে গড়ার সুযোগ অপরিহার্যভাবেই রয়ে গেছে। যা আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশা দেখাচ্ছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে মনকে ঔপনিবেসিকতার শিকল থেকে মুক্ত করার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্জাগরণ তখনই সম্ভব হবে, যখন আমরা এ সত্য উপলদ্ধি করতে সক্ষম হব।
লেখক:ড.মুহাম্মাদ আব্দুল বারী, ব্রিটেনের বিশিষ্ট নাগরিক নেতা, শিক্ষাবিদ,লেখক ও প্যারেন্টিং পরামর্শদাতা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com