পুরোনো ফোন, ল্যাপটপ, বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিক্রি করার আগে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিভাইসগুলোতে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ছবি, ভিডিও, ই-মেইল, পাসওয়ার্ড, ব্যাংকের ডিটেইলস এবং অন্যান্য সংবেদনশীল তথ্য থাকে, যা যদি সঠিকভাবে মুছে না ফেলা হয় তবে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
তাই ডিভাইস বিক্রি করার আগে নিচের কয়েকটি পদক্ষেপ অনুসরণ করলে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। দেখে নিন যে কাজগুলো করতে পারেন-
ব্যাকআপ নিন: ডিভাইস বিক্রি করার আগে প্রথমে আপনার সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ব্যাকআপ নিন। এটির মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় ডাটা হারানোর আশঙ্কা থেকে মুক্তি পাবেন। ব্যাকআপের জন্য ক্লাউড স্টোরেজ যেমন গুগল ড্রাইভ, আইক্লাউড, ওয়ানড্রাইভ ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া বাহ্যিক হার্ড ড্রাইভ বা পেনড্রাইভ ব্যবহার করেও ব্যাকআপ নিতে পারেন। এতে করে ডিভাইসে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল ও ডাটা নতুন ডিভাইসে সহজেই পুনঃস্থাপন করা সম্ভব হবে।
সব অ্যাকাউন্ট লগআউট করুন: ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য ডিভাইস বিক্রি করার আগে সমস্ত অ্যাকাউন্ট থেকে লগআউট করুন। এতে কেউ যদি ডিভাইসটি হাতে পায়, তাহলে তারা সরাসরি আপনার অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে না। গুগল অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল অ্যাপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপস (যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার) থেকে লগআউট করতে ভুলবেন না। এছাড়া ওয়েব ব্রাউজার থেকেও লগআউট করতে হবে যাতে সেভ করা পাসওয়ার্ড বা লগইন তথ্য অ্যাক্সেস করা না যায়।
আপনার ডিভাইসে যদি এনক্রিপশন ফিচার থাকে, তবে এটি চালু করা উচিত। এনক্রিপশন চালু করার মাধ্যমে ডিভাইসের সমস্ত ডাটা এমন একটি ফরম্যাটে রূপান্তরিত হয়, যা অন্য কেউ পড়তে বা বুঝতে পারে না। ফোন বা ল্যাপটপের সেটিংস মেনুতে গিয়ে সহজেই এনক্রিপশন অপশন খুঁজে পাবেন। এতে ডিভাইস বিক্রি করার আগে আরও এক স্তরের নিরাপত্তা যুক্ত হবে।
ফ্যাক্টরি রিসেট করুন: ব্যাকআপ নেওয়ার পর আপনার ডিভাইসটি ফ্যাক্টরি রিসেট করে দিন। এটি ডিভাইসের সব ডাটা, অ্যাপ এবং সেটিংস মুছে দিয়ে ডিভাইসটিকে প্রথম অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এতে আপনার ব্যক্তিগত ডাটা সম্পূর্ণভাবে মুছে যাবে।
ডাটা ওভাররাইটিং বা সেফ ফরম্যাটিং: যদিও ফ্যাক্টরি রিসেট অনেকটা নিরাপদ, তবে শুধু ফ্যাক্টরি রিসেট করলেই সবসময় ডাটা পুরোপুরি মুছে যায় না। ফ্যাক্টরি রিসেট করার পর বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে কিছু ডাটা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। তাই আরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডাটা ওভাররাইটিং পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ডিভাইসের পুরোনো ডাটার জায়গায় নতুন তথ্য একাধিকবার লেখার মাধ্যমে পুরোনো ডাটাকে অনুল্লিখিত করা হয়। এর ফলে ডাটা পুনরুদ্ধার করা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
ডিভাইসের সব ব্রাউজিং ডাটা মুছে ফেলুন: ফোন বা ল্যাপটপের ব্রাউজারে থাকা তথ্য যেমন ব্রাউজিং হিস্ট্রি, কুকিজ, ক্যাশ, এবং সেভ করা পাসওয়ার্ডগুলোও মুছে ফেলুন। ব্রাউজার থেকে এই ডাটাগুলো মুছে ফেলার জন্য প্রতিটি ব্রাউজারের সেটিংসে ক্লিয়ার ব্রাউজিং ডাটা অপশন থাকে। এভাবে বিক্রির পূর্বে ডিভাইসের সমস্ত ব্রাউজিং ডাটা পরিষ্কার করে নতুন ব্যবহারকারীর কাছে আপনার তথ্য পৌঁছানোর ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন।
সব ডিভাইস ট্র্যাকিং ফিচার বন্ধ করুন: বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইসে ট্র্যাকিং ফিচার থাকে, যা ডিভাইসের অবস্থান নির্ণয় করতে পারে। গুগল, আইক্লাউড বা অন্য কোনো ট্র্যাকিং ফিচার চালু থাকলে সেটি বন্ধ করে দিন।