বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে উত্তমের বাজিমাত

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪

মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে সবজির বাম্পার ফলন পেয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের উত্তম বিশ্বাস। তারা ক্ষেতে গাছ মারা যাচ্ছে না । ২০ শতাংশ জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করে তিনি বাজিমাত করেছেন ।
তিনি ক্ষেতে ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ সার গুটি করে প্রয়োগ করেছেন । নিয়মিত পরিচর্যা করে ক্ষেত পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন । তাই আবাদের ৬৫ দিনের মাথায় তিনি ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ শুরু করেন। এখন ক্ষেতে বেগুন চাষের বয়স ৮৩ দিন। এ পর্যন্ত তিনি ১ হাজার কেজি বেগুন সংগ্রহ করেছেন । প্রতি কেজি বেগুন ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন । সেই হিসেবে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার বেগুন তিনি বিক্রি করেছেন । এখনো ক্ষেতে ১ লাখ টাকা বিক্রি করার মতো বেগুন রয়েছে । আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কৃষক ক্ষেত থেকে বেগুন সংগ্রহ করে বিক্রি করতে পারবেন । আশা করা হচ্ছে এ ক্ষেত থেকে তিনি অন্তত ৩ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করবেন। মাত্র ৩৮ হাজার টাকা খরচ করে উত্তম বিশ্বাস ২০ শতাংশ জমিতে বেগুনের চাষ করেন।
ওই কৃষক বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রঘুনাথপুর ইউনিয়েনের দীঘারকুল ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদারের পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করেছি। এ কারণে অতিবৃষ্টিতেও গাছের গোড়ায় পানি জমেনি। গাছ মার যায় নি। গাছের গোড়া থেকে ৮/৯ ইঞ্চি দূরে ইউরিয়া ,টিএনপি ও পটাশ সার গুটি করে প্রয়োগ করেছি। ক্ষেত সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখেছি। তাই বেগুনে ফল ও ডগা ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ খুব কম হয়েছে। এতে করে বেগুনের বাম্পার ফলন পেয়েছি। বাজারে বেগুনের ভালো দাম পাচ্ছি । ইতমধ্যেই বেগুন বিক্রির ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঘরে তুলেছি। এখনো ক্ষেতে ১ লাখ টাকার বেগুন রয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত বেগুন সংগ্রহ করতে পারব । এতে অন্তত ৩ লাখ টাকার বেগুন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এ পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব । এ সময় অন্য সফলের চাষাবাদ করলে এত টাকা ঘরে তুলতে পারতাম না। আমার দেখাদেখি অনেকেই আগামীতে এ পদ্ধতিতে সবজি আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন ।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ হালদার বলেন, কৃষক উত্তম আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন । এছাড়া নিয়মিত আমি তার ক্ষেত পরিদর্শন করেছি । তিনি ওই ক্ষেতে ভাঙ্গুর ও বিকাশ জাতের বেগুন আবাদ করে সাফল্য পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমে সবজির আবাদ করা হলে সবজির বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব। উত্তমের এ আবাদ পদ্ধতি দেশের কৃষিতে অনেক আগেই উদ্ভাবিত হয়েছে। কিন্তু রঘুনাথপুর ইউনিয়নের এ ব্লকে এ বছরই প্রথম মালচিং পদ্ধতির আবাদ হয়েছে। উত্তমের চাষাবাদ দেখে অনেক কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজি আবাদে আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ পদ্ধতি সম্প্রসারণ করতে পারলে বর্ষা মৌসুমে সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অধিকদামে সবজি বিক্রি করে কৃষক লাভবান হবেন। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি।
রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক অমল মন্ডল বলেন, বর্ষা মৌসুমে আমাদের কিছু জমি পতিত থাকে। সেখানে এ পদ্ধতিতে সবজির চাষবাদ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এমনই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উত্তম। আগামীতে এ পদ্ধতিতে সবজি উৎপাদন করব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাফরোজা আক্তার বলেন, নতুন, নতুন চাষ পদ্ধতি সম্প্রারণ করে আমরা ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই। সেই সাথে কৃষকের আয় আমরা বাড়িয়ে দিতে কাজ করছি। তেমনই একটি কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার করে কৃষক উত্তম অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বেগুনের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে লাভবান হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com