জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা পল্লীতে বস্তায় আদা চাষ করে তরুণ উদ্যোক্তা সেকেন্দার আলী বাবু সাফল্য অর্জন করেছেন। পতিত জমিতে তার আদা চাষে সাফল্য দেখে অনেকের অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে।
গত রোববার বিকেলে কথা হয় দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ি গ্রামের তরুণ কিছু উদ্যোক্ত মোঃ সেকেন্দার আলী (২৭) এর সঙ্গে।তিনি বলেন গত জুলাই মাসে মাঝামাঝি সময়ে ইউটিউবে বস্তায় আদা চাষের ভিডিও দেখেন। পরে এ পদ্ধতিতে আদা চাষের উদ্যোগ নেন তিনি। এর পর নিজ উদ্যোগে বাড়ির আছে পতিত জমিতে ছাই, জৈব সার বালু মিশিয়ে মাটি তৈরী করে বস্তায় রাখা হয়। ওই বস্তা গুলোতে প্রায় দুই লক্ষ টাকার বিনিয়গে বর্তমানে ৩ হাজার বস্তায় আদা চাষ করছেন তিনি। যা বিক্রি হতে পারে ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। মাত্র তিন মাসের মধ্যে আদা পরিপক্ক হতে শুরু করেছে।নিয়ম মাফিক পরিচর্যা করার কারণে বস্তায় লাগানো আদার গাছ গুলো গোড়ায় চাপা ধরে আদা ভেসে উঠা দেখা যাচ্ছে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বাবু‘র এ সাফল্যে খুশি তার পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
তরুণ এ কৃষি উদ্যোক্তা সেকেন্দার আলী বাবু বলেন, এ পদ্ধতিতে আদা চাষে সীমিত খরচ ও অল্প শ্রম ব্যয়ে সফলতা অর্জন করা যায় । প্রতি বস্তায় প্রায় আড়াই থেকে ৩ কেজি আদা পাওয়া যায়। সার বা কীটনাশক ব্যবহার কম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি আমরা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে বাসা-বাড়ীর পতিত জায়গায় এ ভাবে আদা চাষ করতে পারি। এতে আমাদের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হতে পারি। আমার আদা চাষ দেখতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন। আমি তাদের আগ্রহী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
আমাকে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকে। তিনি বলেন, গত ৮ নভেম্বর দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বস্তায় আদা চাষ পরিদর্শন করেছে। তিনি আমার এ পদ্ধতিতে আদা চাষে সফলতা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন এবং আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। আমি তাদের পরামর্শে প্রাথমিক ভাবে আদা চাষ শুরু করেছি। লাভ হলে ভবিষ্যতে আরো ব্যাপক পরিমানে আদা চাষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সেকেন্দার আলী বাবু‘র আদা চাষ দেখতে আসা পৌর এলাকার তেঁতুলিয়া গ্রামের মিলন মাস্টার বলেন, আমি ইউটিউবে আদা চাষ দেখেছি। বাস্তবে কেমন হয় তাই দেখতে আমি বাবু ভাইরে আদার বাগানে এসেছি। দেখে খুব ভালো লাগলো। আমি আমার পতিত জায়গায় এমন আদা চাষ শুরু কবরো। এমন কথা বলেন,স্বজনপুকুর গ্রামের রজমান আলী, গৌরীপাড়া গ্রামের কুদ্দুস আলীসহ অনেকে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ রুম্মান আখতার জানান, স্বল্প জায়গায় বস্তায় আদা চাষে করা যায়। তাছাড়া কম খরচ ও কম পরিশ্রম আদা চাষের সুবিধায় আমাদের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বস্তায় আদা চাষ শুরু হয়েছে। বস্তায় আদা চাষের বিষয়ে আমাদের সঙ্গেকৃষক পরামর্শ নিতে আসলে আমরা তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি এ পদ্ধতিতে গ্রাম থেকে শহরের সব বাসাড়ীতেই আদা চাষ হবে।