পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় দীর্ঘ বছর ধরে প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে খাল ও বিভিন্ন সরকারি সম্পত্তি। এতে খাল সংকুচিত হবার পাশাপাশি নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। অপর দিকে পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসলী মাঠ, ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছে কৃষকরা। সর্বশেষ দেশের দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল এর কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে বিক্ষুব্দ কৃষক ও জনতা পৌর শহরের দক্ষিণ বন্দর স্লইজগেট ও বেতমোর ইউনিয়নের কালিরহাট বাজার সংলগ্ন বাধ কেঁটে দেন। উপজেলা প্রশাসন বারবার অবৈধ উচ্ছেদ কর্যক্রম পরিচালনা শুরু করলেও প্রভাবশালীরা মামলা করে তা থামিয়ে দিচ্ছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, মঠবাড়িয়া প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মধ্যে বহেরাতলা এলাকায়, দক্ষিণ বন্দর স্লুইজগেট, পিয়াজ হাটা, হাসপাতাল সম্মুখ খালে এক কিলোমিটার, দক্ষিণ বন্দর স্লুইজগেট-আন্দারমানিক দেড় কিলোমিটার, মঠবাড়িয়া-গুলিশাখালী, মঠবাড়িয়া-সাপলেজা সড়কের খালেরপাড়ে শহস্থাধিক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এদিকে উপজেলার সাপলেজা বাজারের পশ্চিম অংশে আলিশ্যার মোড় এলাকায় খাল দখল করে শতাধিক পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে সাপলেজা ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজারে, মিরুখালী, বড়মাছুয়া, তুষখালী ইউনিয়নের জানখালী বাজার, গুদিঘাটা বাজার, হলতা গুলিশাখালী, আলগী পাতাকাটা বাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় খালের দু‘পাশ দখল করে প্রভাবশালীরা কাঁচা-পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে। স্থানীয়রা জানান, প্রভাবশালীরা খালের পাড় দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িসহ নানা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন এবং অব্যাহত রাখছে। অপরদিকে খালের দুই তীর সংশ্লিষ্ট জনবসতির ময়লা-আবর্জনা, বর্জ্যসহ অসংখ্য বাসা বাড়ির শৌচাগারের পাইপ সংযোগ থাকায় খালের পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। প্রভাবশালীরা যেন দখলের প্রতিযোগীতায় মেতে রয়েছেন। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আলী হায়দার বলেন, বহেরাতলা তিন খালের মোহনা ভূমিদস্যুরা যেভাবে খাল ভরাট করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে এতে মনে হচ্ছে এদের বাপ দাদার সম্পত্তি। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অদূর ভবিষ্যতে এখানে খাল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কলামিস্ট নূর হোসাইন মোল্লা, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে প্রশাসনের জোড়ালো হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতেরও উচিৎ বাদির বক্তব্য শুনেই নিষেধাজ্ঞা না দেয়া। আদালতের প্রতি বিনয়ের সাথে আবেদন রইলো, তদন্ত সাপেক্ষে বাদির আবেদন মঞ্জুর করুন। মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা মো. সোহেল আহম্মেদ দুঃখের সাথে বলেন, অবৈধ দখলদারদের কারণে পানি সরবরাহ করতে ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়। যে কারনে আগুন লাগলেও পানি সংগ্রহে দেরী হবার কারনে অনেক সময়ই অনাকাঙ্খিত ক্ষতি হয়ে যায়। মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক আবদুল কাইয়ূম প্রভাবশালীদের কিছু মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অবৈধ উচ্ছেদ কর্যক্রম শুরু করলে ভুক্তভোগীরা কিছু দিনের সময় নিয়েছে। তবে আমাদের উচ্ছেদ কর্যক্রম চলমান থাকবে।