বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:১৭ পূর্বাহ্ন

কয়রায় সুন্দরবনে বনদস্যু নির্মূলের দাবিতে মানববন্ধন

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪

সুন্দরবনকে দস্যুমুক্তকরণ ও জেলে-বাওয়ালীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় কয়রা উপজেলার সুতির বাজার এলাকায় সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলন কমিটি এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। কয়রা কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম আবদুল মালেকের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন শিক্ষক মহসিন আলম, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়রা উপজেলার ছাত্র প্রতিনিধি মোঃ গোলাম রব্বানী, কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন, প্রেসক্লাব কয়রার সদস্য সচিব কামাল হোসেন, ইউপি সদস্য আবু সাইদ, বনজীবী জেলে ইমান আলী, মৌয়াল আলাউদ্দীন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, প্রশাসন থেকে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন ঘোষণা দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে দীর্ঘদিন পর আবারও ডাকাতের উৎপাত বেড়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে বনজীবীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। সুন্দরবনে এভাবে দস্যুতা চলতে থাকলে বনজীবীদের জীবিকা, পর্যটন ও রাজস্ব আদায়ে হুমকির পাশাপাশি বিপন্ন হবে বন্য প্রাণী ম্যানগ্?োভ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বন দস্যু দমনে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে। মানববন্ধনে বনজীবী জেলেরা বলেন, গত কয়েক মাস ধরে সুন্দরবনে ডাকাতদের দল নেমেছে। জেলেদের আটকে রেখে মাথাপিছু ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করছে তাঁরা। মুক্তিপণের টাকা দিতে বিলম্বের কারণে জিম্মি জেলেদের বনের মধ্যে আটকে বেপরোয়া শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দস্যুতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে জেলেদের সুন্দরবনে যাতায়াত নির্বিঘ করতে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে কয়রা কপোতা মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আ ব ম আবদুল মালেক বলেন, নজরদারির অভাবে সুন্দরবনে আবারও দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। আমরা আশঙ্কা করছি সুন্দরবনে ভয় বাড়লে আবারও বন উপকূলে বাড়বে দস্যুদের পৃষ্ঠপোষক মহাজনদের দৌরাত্ব।
এরইমধ্যে অনেক জেলে ভয়ে সুন্দরবনে যাওয়া বন্দ করেছে। কয়েক মাস ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে ডাকাতদল ঘুরে বেড়াচ্ছে। লুট করছে জেলেদের মাছ কাঁকড়া। বনদস্যুরা এখনো ছোট ছোট দলে আছে। ওদের সংঘবদ্ধ হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নেয়া দরকার। মানববন্ধনে বনজীবী জেলে-বাওয়ালি, বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, বনজীবী পরিবারের সদস্য ও উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছিলেন। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রাণবৈচিত্রে ভরা সুন্দরবনকে ‘দস্যুমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়। এখন এসময়ে এসে অন্তর্র্বতী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিগত সদ্য পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা এ ধরনের জঘন্য কাজের সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে। মানব বন্ধনে সুন্দরবন সুরক্ষা কমিটি, বনজীবী ও এলাকার সুশীল সমাজ এ বন্দিদশা থেকে অতিদ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com