রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::

ইকামতে সালাত ও মসজিদ কমিটি

মোহাম্মাদ মকছুদ উল্লাহ
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০২৫

ঈমানের পরে ইসলামের প্রথম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিধান ‘ইকামাতে সালাত’ মসজিদকেন্দ্রিক সামাজিক ইবাদাত। ইকামাতে সালাতের যথার্থতা অনেকাংশে মসজিদ কমিটি বা পরিচালনা পরিষদের ওপর নির্ভরশীল। মসজিদ পরিচালনা পরিষদ তথা মসজিদ কমিটি যদি আন্তরিক না হয় বা অযোগ্য হয় তাহলে ইসলামের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিধানটির যথাযথ পরিপালন কিছুতেই সম্ভব নয়। আর সে কারণেই মহান আল্লাহ মসজিদ কেমন লোকদের দ্বারা আবাদ হবে, কারা মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব পালনে যোগ্য, সে বিষয়টি পবিত্র কুরআনে স্পষ্ট বাতলে দিয়েছেন। এরশাদ হয়েছে : মুশরিকরা আল্লাহর ঘর মসজিদ আবাদ করার যোগ্যতা রাখে না, যখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরির স্বীকৃতি দিচ্ছে। তাদের আমলসমূহ বরবাদ হবে আর তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে। নিশ্চয়ই কেবল তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করতে পারে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর ওপর ও শেষ বিচারের দিনের ওপর এবং নামাজ কায়েম করে জাকাত প্রদান করে আর আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। অতএব আশা করা যায়, তারা হেদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা আত-তাওবাহ : ১৭-১৮)
উদ্ধৃত আয়াত দু’টিতে মহান আল্লাহ মসজিদ পরিচালনায় অযোগ্য কারা এবং যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে কী কী গুণ থাকা আবশ্যক স্পষ্ট বর্ণনা করেছেন। আয়াতে প্রথমেই অযোগ্য লোকদের বিবরণ দেয়া হয়েছে। তারপরে যোগ্যতার গুণাবলি বর্ণনা করা হয়েছে, যাতে মসজিদ কমিটি গঠনের আগে অযোগ্য ব্যক্তিদেরকে চিহ্নিত করে যোগ্যদের মধ্য থেকে যোগ্যতরদের নিয়ে মসজিদ পরিচালনা পরিষদ গঠন করা যায়। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত মসজিদ পরিচালনায় অযোগ্য ও যোগ্য লোকদের বৈশিষ্ট্য :
মসজিদ পরিচালনায় অযোগ্য যারা : মুশরিক, যারা মহান আল্লাহর সত্তা বা গুণাবলিতে কোনো ব্যক্তি সংগঠন বা সৃষ্টিকে সমকক্ষ মনে করে। যারা প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে, আকিদা-আমলে, শিরক-বিদআতকে লালন, পালন ও আনুকূল্য প্রদান করে, তারা মসজিদ পরিচালনা পরিষদের জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য।
মসজিদ পরিচালনায় যোগ্য ব্যক্তিদের গুণাবলি : ১. ঈমান : যারা মহান আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলিতে এবং হজরত মোহাম্মাদ সা:-এর রিসালাতের ওপর একনিষ্ঠভাবে বিশ্বাস করে।
২. যারা পরকালে বিশ্বাস করে। অর্থাৎ যারা এ বিশ্বাস করে যে, জীবনের ছোট-বড়, দৃশ্যমান-অদৃশ্য সব কর্মকা-ের জন্য কিয়ামাতের দিন মহান আল্লাহর দরবারে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। বিন্দু পরিমাণ আল্লাহর নাফরমানি করলেও তার শাস্তি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না এবং সামান্য নেক আমলের পুরস্কার থেকেও কাউকে বঞ্ছিত করা হবে না। ৩. যারা নামাজ কায়েম করে। অর্থাৎ যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করে এবং নামাজের নৈতিক ও আদর্শিক শিক্ষা ধারণ করে আর সে অনুযায়ী জীবন ও সমাজ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ৪. যারা জাকাত আদায় করে। অর্থাৎ তারা হালাল উপায়ে সম্পদ অর্জন করে এবং উপার্জিত সম্পদ থেকে মহান আল্লাহর নির্ধারিত অংশ ‘জাকাত’ স্বপ্রণোদিত ও স্বতঃস্ফূর্ত হয়ে আদায় করে। ৫. আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় না করা। অর্থাৎ তারা সত্যাশ্রয়ী জীবনে ইকামাতে সালাত পরিপালনে মহান আল্লাহ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, শক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিন্দুমাত্র ভয় করে না।
৬. হেদায়াতের অনুসরণ করা। অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধানকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ সা:-এর আদর্শ তথা সুন্নাতের ভিত্তিতে জীবনের সব ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ মান্য করে। লেখক : পেশ ইমাম ও খতিব, রাজশাহী কলেজ কেন্দ্রীয় মসজিদ




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com