কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার চারিদিকে সরিষা ক্ষেতের সমারোহে হলুদ রঙে মৌ মৌ করছে। এখন র্পযন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আর যথাযথ পরিচর্যার কারণে দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে চোখ জুড়ানো হলুদ সরিষা ক্ষেত। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ভাল ফলনের আশা করছেন সরিষা চাষীরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সরিষা চাষের লক্ষমাত্রা ছিল ২ হাজার ৬শ হেক্টর আর অর্জিত হয়েছে প্রায় ২ হাজার ২শত হেক্টর । যা গত বছরের চেয়ে ৩শ হেক্টর বেশি। চলতি বছরে উপজেলায় প্রণোদনার আওতায় ৩ হাজার ২শ জন কৃষককে এবং পুর্ণবাসনের আওতায় ১হাজার ৩শ কৃষককের মাধ্যমে সরকারী ভাবে সরিষা প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। বোরো ধানের চারা লাগানোর আগেই বোনাস ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করা হয়। আর এ কারণে অনেক কৃষক আমন ধান কাটার পর লাভবান হতে ওই জমিতে সরিষা চাষ করে। ঘন কুয়াশা এ ফসলের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে না তাই বেশির ভাগ কৃষকই এখন অন্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা চাষ করছেন। এবারে এ উপজেলায় বারি-৯,১৪, ১৫,১৮ টোরী-৭ ও স্থানীয় জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিস জানিয়েছে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর সরিষা ক্ষেতে ভালো ফলন দেখা দিয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ফলন হতে পারে। ভোজ্য তেলের ব্যাপক চাহিদা ও বাজার চড়া থাকায় এবারে সরিষার ভালো দাম পাবেন কৃষক। সরিষা কেটে ঐ জমিতেই আবার বোরোর আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কপিল উদ্দিন, আব্দুর রহমান সরকারী ভাবে কৃষি সরিষা প্রদর্শনী প্লটের সরিষা চাষ করছেন। প্লটের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্রী নকুল কুমার বলেন, সরকারী ভাবে কৃষি সরিষা প্রদর্শনী প্লটের এবারে সরিষার ফলন অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। এই কৃষকদের দেখে আশেপাশের অন্যান্য কৃষকরাও সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। সরিষা আবাদে খরচ কম এবং ঐ জমিতে রোরো চাষে খরচ কম লাগে। আমন ও ইরি-বোরোর মাঝের উদ্বৃত্ত উৎপাদিত ফসল। তাই, কৃষকেরা সরিষা চাষে ব্যাপক আগ্রহ-উদ্দীপনায় ঝুকে পরেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন জানান, উপজেলায় এবার উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হয় এ সরিষা চাষে। সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করছি। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।