বড়লেখায় কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনঃস্থাপন প্রকল্পের সংস্কার কাজে চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। রাস্তাটি পুনঃস্থাপনের দাবীতে রোববার ভোক্তভোগি গ্রামবাসি সংস্কার কাজ চলমান রেললাইনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। উত্তর শাহবাজপুর উন্নয়ন ফোরাম এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সংস্কার কাজে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ অবরুদ্ধ গ্রামগুলোর জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা পুনঃনির্মাণ করে না দিলে রেললাইনের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন ভোক্তভোগিরা। উপজেলার উত্তর শাহাবাজপুর ইউনিয়নের চরগ্রামে রেললাইনে ঘন্টাব্যাপি অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে ভোক্তভোগি চারটি গ্রামের দুই শতাধিক বাসিন্দা ও স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য দেন উত্তর শাহবাজপুর উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি ও চরগ্রামের বাসিন্দা হাসান শামীম, স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুক উদ্দিন, সমাজসেবক আব্দুর রউফ, আলম উদ্দিন, আফতাব উদ্দিন, বদরুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, মামুন আহমদ, সুখেন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ। জানা গেছে, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটি বড়লেখার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের চরগ্রামের ভেতর দিয়ে উত্তর দিকে গিয়েছে। বহু বছর ধরে চরগ্রামসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন রেললাইনের পাশের রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেন। পাশাপাশি হালকা যানবাহনও এই রাস্তায় চলাচল করছে। রাস্তাটি চরগ্রাম-শাহবাজপুর রাস্তা হিসাবে পরিচিতি। মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে কয়েক বছর আগে রাস্তার এক পাশে মাটি ফেলে প্রশস্থ করা হয়। এদিকে, প্রায় দেড় যুগ ধরে বন্ধ কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইন আবারও চালুর লক্ষ্যে পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালিন্দ রেল নির্মাণ কোম্পানী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার কাজে রেললাইনের সঙ্গে মিশে চরগ্রাম-শাহবাজপুর রাস্তাটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যার কারণে চরগ্রামসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের লোকজন পড়েছেন মহা বিপাকে। এলাকাবাসির চলাচলের রাস্তার ব্যবস্থা না করে রেললাইন নির্মাণ ও ট্রেন চলাচল শুরু হলে চার গ্রামের ৫-৭ হাজার মানুষ কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। মানববন্ধন সমাবেশে বক্তারা বলেন, কয়েক যুগ ধরে রেললাইনের পাশ দিয়ে যাওয়া-আসার কারণে সেখানে রাস্তা তৈরি হয়েছে। কয়েকটি এলাকার মানুষ নিয়মিত এই রাস্তায় চলাচল করেন। তাদের চলাচলের আর কোনো রাস্তা নেই। বিকল্প রাস্তা না রেখে রেললাইন সংস্কার ও সম্প্রসারণে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিকল্প রাস্তা না করে ট্রেন চালু করলে চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। দীর্ঘদিন ধরে আবেদন নিবেদন করে আসলেও রেল নির্মাণ প্রকল্পের কেউই গুরুত্ব দিচ্ছে না। দ্রুত বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা না নিলে ভোক্তভোগি গ্রামবাসি তাদের এলাকায় সংস্কার কাজ আসা মাত্র তা বন্ধ করে দিবেন। প্রয়োজনে হাজার হাজার মানুষ রেললাইনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ করবেন।