চট্টগ্রামের পটিয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেঘা প্রকল্পে কয়েক শত কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কেন্দ্র করে বিগত ১৫ বছর সাবেক বিতর্কিত এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে পটিয়ায় একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠে। সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যরা হলেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী, ঠিকাদার মনিরুজ্জামান মনির ও মেজবাহ উদ্দিন। সংসদ সদস্য ও হুইপ পদবীটি লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সামশুল হক। নিজ গ্রামে করেছেন দৃষ্টিনন্দন বাড়ি,কিনেছেন বেশ কয়েকটি দামি দামি বিলাসবহুল গাড়ি। বিদেশে কয়েক শত কোটি টাকা পাচার করার গুঞ্জনও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সামশুল হক চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্ত করছে। ফলে দুদক তার পরিবারের আরও ৬ সদস্যের সম্পদ ও ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান পটিয়ার বিতর্কিত সাবেক এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি আত্মগোপনে চলে গেলেও পটিয়া পাউবোতে এখনো সক্রিয় রয়েছে তার রেখে যাওয়া সিন্ডিকেট। অবশ্যই বর্তমানে এই সিন্ডিকেটে ভাগ বসিয়েছে বিএনপির কয়েকজন নেতা। পটিয়ায় রয়েছে সামশুলের মাসিক বেতনদারী ৫-৬ জন সাংবাদিক। সিন্ডিকেট কর্তৃক ম্যানেজ হওয়ার কারণে তারা এসব দেখেও না দেখার বান করছেন। তারা সামশুল হকের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে কোন ধরনের নিউজ করছেন না। সামশুল হক চৌধুরী পালিয়ে আতত্মগোপনে চলে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এই ভূত এখনো দূর হয়নি। পরিতাপের বিষয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা নানাভাবে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এতদিন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার সাহস পায়নি। ৫ আগস্টের পর সামশুল হক চৌধুরী ও তার সিন্ডিকেটের অপকর্মের খতিয়ান প্রকাশ্যে আসছে। তবে এলাকা ভিত্তিক কিছু কিছু বিএনপি নেতা এই সিন্ডিকেটের সাথে ভিড়ে ঠিকাদারকে মালামাল সাপ্লাই দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অনুসন্ধানে জানা যায়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে “চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন?্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১১৫৮ কোটি টাকা,”শ্রীমাই খালে মাল্টিপারপাস হাইড্রোলিক ইলেভেটর ড্যাম নির্মাণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৩৩ কোটি টাকা সহ প্রায় ১৩ শত কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছ। উপজেলার কুসুমপুরা, ধলঘাট, হাবিলাসদ্বীপ, ভাটিখাইন, আশিয়া, জিরি, কাশিয়াইশ, বরলিয়া, জঙ্গলখাইন, পৌরসভা এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণে কয়েক শত একর কৃষি জমি নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। পাউবো’র কাজ নিয়ে পটিয়ার ২০-২৫ গ্রামের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীকে নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের কাজ দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ প্রতিবাদ করতে না পারে। সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাইদগাঁও রাজঘাটা ব্রীজের পাশে ৪-৫ স্পটে ইঞ্জিনিয়ারের অনুপস্থিতিতে দেদারসে চলছে নিম্নমানের বালি, সিমেন্ট, এলসি পাথরের সাথে লোকাল পাথর মিশিয়ে ব্লক ঢালাইয়ের কাজ। এতে কাজের গুণগত মান এবং স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পটিয়া পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোফরান রানা ফেসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে ও পোস্ট দিয়ে বলেন, স্ক্যাভেটর দিয়ে মাইলের পর মাইল কৃষি জমির মাটি লুট ও খাল খননের নামে ফসলি জমি ভরাট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সরকারতো কারও ক্ষতি করে উন্নয়ন করতে বলেননি, মানুষের পেটে লাথি মারতে বলেননি। সরকারতো জনগণের ক্ষতিপূরণ ও উন্নত মানের কাজের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এই টাকা লুটপাট করছেন এরা কারা? জনগণ জানতে চায়? খাল খননের নামে মানুষের জমি কেটে অথবা ভরাট করে কৃষি জমির ফসল নষ্ট করে, বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছ কেটে, ক্ষতি পূরণ না দিয়ে মানুষের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। কাউন্সিলর গোফরান রানা আরও জানান, চাঁনখালি খালের পাড়ে দুই মৌজায় আমাদের চার একরের বেশি জমি রয়েছে। করল মৌজায় খাল পাড়ে আমাদের অন্তত আড়াই একর জমি নষ্ট করা হয়েছে খাল খননের নামে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসি ল্যান্ড ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার যৌথ পরিমাপ করে সীমানা চিহ্নিত করে দেওয়ার পরও রাতের আঁধারে সীমানার বাইরে গিয়ে আমাদের জমি কেটে ও ভরাট খালের মাটি রেখে ফসলি জমি নষ্ট করেছে সিন্ডিকেটের ঠিকাদার। জমির আমবাগান, লিচুবাগান, লেবুবাগান মাটির নিচে চলে গেছে। ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলে বারবার সময়ক্ষেপন করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, খালের প্রস্থ ৮৫ ফুট, গভীরতা ১৬ থেকে ১৮ ফুট এবং তলা ২০ ফুট হওয়ার কথা থাকলেও খাল খননে এই নিয়ম মানা হয়নি। খালের কোথাও ১৩০ ফুট, কোথাও ১২০ ফুট প্রশস্থতাও রয়েছে। পটিয়া পৌরসভার সুচক্রদন্ডী গ্রামের ভুক্তভোগী মফিজুর রহমান জানান, সিন্ডিকেটের বাইরে পটিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডে কেউ কাজ করতে পারেন না। সিন্ডিকেটকে শতকরা পাঁচ থেকে দশ ভাগ হারে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে সাধারণ ঠিকাদারদের কাজ করতে হয়। টাকা না দিলে প্রকৃত যোগ্য ঠিকাদারকে বাদ দেওয়া হতো। একবার সিন্ডিকেটের বাইরে মেসার্স রয়েল এসোসিয়েটস এর স্বত্বাধিকারী দিদারুল আলম টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করে সর্বনিন্ম দরদাতা হওয়ার পরও সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ না করায় তাকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। কিছু কিছু প্রকল্প প্রয়োজনীয় হলেও বেশ কিছু প্রকল্প শুধু নিজেদের পকেট ভারি করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমির মালিক ও কৃষকের ক্ষতি করে সরকারি টাকার অপচয় করে কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। যেগুলো জনগণের কোন উপকারে আসেনি। মফিজুর রহমান আরও জানান,সাবেক বিতর্কিত এমপি ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও পাউবো’র কতিপয় কর্মকর্তার কমিশন ও টেন্ডার বানিজ্যের কারণে পটিয়ার মানুষের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পাউবো’র হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত ১৫ বছরে পটিয়ার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সামশুল হক কয়েক শত কোটি টাকার মালিক বনে জান। লুটপাটের বড় একটা অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে পটিয়ার লোকমুখে প্রচার রয়েছে। সিন্ডিকেটের হুমকি-ধমকি ও ক্ষমতার দাপটের কারণে এই সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ কাজ করার সাহস পায়নি। সিন্ডিকেটের বাইরে কেউ টেন্ডার দিলে তাকে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হতে হতো। সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে অন্য কাউকে কাজ করতে দেওয়া হতো না। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নাইখাইন এলাকার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন জানান, বিগত ১৫ বছর সিন্ডিকেটের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলী পরস্পর যোগসাজশে সামশুল হকের আশ্রয় প্রশ্রয়ে উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছে। ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে পটিয়া পাউবো’র প্রকল্পগুলোতে। উন্নয়ন কাজে পাউবোর কোনো কর্মকর্তার তদারকি নেই বললেই চলে। পাউবো’র প্রকল্প মানেই যেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মহোৎসব। যতটুকু কাজ হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি অর্থ চলে গেছে প্রকল্প সিন্ডিকেট ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের পকেটে। বিগত ১৫ বছর এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সামশুল হক চৌধুরী উন্নয়নের নামে শুধু পানি উন্নয়ন বোর্ডে থেকে কয়েক শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কয়েকজন প্রকৌশলী পরস্পর যোগসাজশে ভাগ বাটোয়ারার অংশীদার হয়েছেন। কাজের মান নিয়ে উদাসীন ছিলেন কর্তৃপক্ষ। এই কাজ নিয়ে এলাকাবাসির যে স্বপ্ন ছিল তা বিলীন হতে চলেছে। শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ বেশি দরে প্রাক্কলন তৈরী করে টেন্ডারবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্থানীয় প্রতিবাদকারীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো কাজ করছেন সিন্ডিকেটের সদস্যরা। নাজমুল হোসেন আরো জানান, সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে দোর্দন্ড প্রতাপে পটিয়ায় টেন্ডার বানিজ্য করেছে ঠিকাদার মনিরুজ্জামান। প্রকল্পের সিংহভাগ কাজ তিনি ভাগিয়ে নিয়েছেন বলে প্রচার রয়েছে। বেড়িবাঁধের নামে আমাদের প্রায় আড়াই একর কৃষি জমি পুকুরের মত করে মাটি লুট ও ফসলি জমির উপর বাঁধ দেয়া হয়েছে। মাটি ক্রয় ও পরিবহন,জমি অধিগ্রহণ ও ফসলি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ সরকারি বরাদ্দ থাকলেও আমাদের কোন টাকা দেওয়া হয়নি। মাটি ক্রয় না করে কৃষি জমি থেকে দেওয়ায় শুধু মাটি বাবদ শত কোটি টাকা লোপাট করেছে। আমি ক্ষতিপূরণ দাবি করে প্রতিবাদ করায় আমাকে পটিয়া থানার পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। হাইদগাঁও এলাকার সচেতন নাগরিক আজাদ হাসান রিপন জানান, নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাতে হয় শ্রীমাই খাল এলাকার বাসিন্দাদের। নির্মাণ স্থলে কাজের বিবরণ সংবলিত কোন সাইনবোর্ড টানানো হয়নি। গভীর নলকূপের পানির পরিবর্তে ঢালাইয়ে ব্যবহার হচ্ছে শ্রীমাই খালের পানি। তাছাড়া ঢালাইয়ে কেমিক্যাল ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। মাঝে মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার গেলেও তাদের সামনে প্রকাশ্যে চলছে এসব কাজ। অদৃশ্য কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম দেখেও নীরব থাকায় বাড়ছে জনমনে ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া। প্রকৌশলীদের তদারকির অভাবে এমন অনিয়মের ঘটনা ঘটছে। এতকিছুর পরেও এ ব্যাপারে উদাসীন পাউবোর সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা । ঢালাই চলাকালীন কমপক্ষে একজন প্রকৌশলী উপস্থিত থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও হরহামেশা ঢালাই হয় প্রকৌশলী ছাড়াই। ১:২.৫:৫ মাত্রার ঢালাই টেন্ডারে থাকলেও বালি ও পাথরের পরিমাণ বেশি এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ঢালাইয়ের পর কমপক্ষে ২১ দিন ব্লক ভিজিয়ে রাখতে হয়। রোদ বেশি হলে এর সময়কাল আরও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। সিডিউলে বালির এফএম কমপক্ষে ১.৫ হলেও ব্যবহার হচ্ছে এফএম ১ থেকে. ৮ সাইজের কাঁদাযুক্ত বালি। তদারকি করার কেউ না থাকায় ঠিকাদার নিজের খুশিমতো নির্মাণ কাজ করছেন। একারণে ব্লকের স্থায়ীত্ব ও মান নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এভাবে কাজ করা হলে তা কিছুদিনের মধ্যেই নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে। প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে ইচ্ছামতো কাজ করছে ঠিকাদার। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রকৌশলীসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ফোন করা হলেও নেই কোনো অগ্রগতি। অদৃশ্য কারণে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিচ্ছেন না। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে নিম্নমাণের কাজ হলেও তারা আর কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম, আবদুল হক, আবদুল হাকিম জানান, ধানের চারা রোপণ করেছে এমন জমিতে চালানো হয় স্ক্যাভেটর। জমির মালিকদের প্রথমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হলেও এ পর্যন্ত তেমন কোন ক্ষতিপূরণ পায়নি। এখানকার ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা অভিযোগ করেছেন, একদিকে অধিগ্রহণ ছাড়াই তাদের জমি বেড়িবাঁধের ভেতরে ঢোকানো হয়েছে। আরেক দিকে আবাদি জমিতে পুকুরের মতো খনন করে মাটি তুলে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। স্ক্যাভেটর দিয়ে পুকুরের মতো বড় বড় গর্ত করে কৃষি জমি থেকে মাটি নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে বাঁধ। আবার কোনো কোনো জায়গায় ভরাট হওয়া খালের মাটি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে ফসলি জমি। প্রভাবশালী সিন্ডিকেটটি উন্নয়নের নামে কৃষকদের ওপর এভাবেই জুলুম করছে। ভয়ে মুখ খুলছেনা কৃষক ও জমির মালিকরা, কাঁদছেন নীরবে নিবৃত্তে। এবিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য ঠিকাদার মনিরুজ্জামানকে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। ঢালাই কাজের কোন সাইটে বাপাউবো পটিয়া পওর উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনিসুর রহমান খানসহ কোন প্রকৌশলীকে উপস্থিত দেখা যায় না। তাহার বক্তব্য জানতে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। বাপাউবো চট্টগ্রাম পওর বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ জানান, আমরা পাথর, বালি, সিমেন্ট ইত্যাদি নির্মাণ সামগ্রী টেস্ট করেছি এবং প্রকল্প সাইট ও তৈরিকৃত ব্লক সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। আমাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়েছে। তাছাড়া সিসি ব্লকগুলো উর্ধতন কর্তৃপক্ষ দ্বারা গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বুয়েটে পাঠানো হয়। পরীক্ষায় সন্তোষজনক রিপোর্টের ভিত্তিতে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হয়। প্রকল্প পরিচালক খ.ম জুলফিকার তারেক জানান, আমার জানা মতে এরকম হওয়ার কথা না, ঢালাইয়ে রেডিমেড ব্যবহার করার কথা। কেন ম্যানুয়েল ব্যবহার হচ্ছে তা খতিয়ে দেখব। তাছাড়া তদন্ত করে কোন অনিয়ম দেখলে সাথে সাথে জাজ বন্ধ করে দেব।