রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:১১ পূর্বাহ্ন

ডিপিএস-এফডিআরে কোন ব্যাংকে কত মুনাফা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মানুষ সঞ্চয় করেন। সঞ্চয়ের জন্য মানুষের অন্যতম আস্থার জায়গা ব্যাংক।সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দেওয়ায় দ্বিধায় পড়েন গ্রাহকরা। তবে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে ব্যাংকগুলোর সংকট কেটে যাচ্ছে, গ্রাহকের আস্থাও ফিরে আসতে শুরু করেছে। আগামীর আর্থিক নিরাপত্তার কথা ভেবে অনেকেই সঞ্চয় করার কথা ভাবছেন। তবে এই মুহূর্তে কোথায় সঞ্চয় করবেন বা কী পরিমাণ মুনাফা পাবেন বা জমানো অর্থের নিরাপত্তাই কতটুকু- এসব নিয়ে জাগো নিউজের গ্রাহকদের জন্য থাকছে এবারের আয়োজন।
কোন ব্যাংকে কষ্টার্জিত অর্থ রাখলে একটু বেশি মুনাফা মিলবে, এটি যেমন গ্রাহকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কীভাবে কী পরিমাণ অর্থ রাখবেন এটাও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা রাখার নাম হলো ডিপোজিট পেনশন স্কিম বা মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প (ডিপিএস)। বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপিএসের ভিন্ন ভিন্ন নাম রয়েছে। এর বিপরীতে ব্যাংকগুলো মাসিক, ত্রৈমাসিক, ছয় মাসিক ও বাৎসরিক সুদ বা মুনাফা দিয়ে থাকে। এছাড়া গ্রাহকের জন এফডিআর করার সুযোগ রয়েছে। এতে সর্বনি¤œ তিন মাস থেকে তিন বছর বা তারও বেশি সময়ের জন্য ব্যাংকগুলোতে সঞ্চয় করার সুযোগ থাকে। এসব সঞ্চয়ের বিপরীতে যে সুদ দেয়, তার নাম স্থায়ী আমানতে সুদের হার বা এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রেট)। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের বিদ্যমান ৬১টি ব্যাংকের সুদের হার ভিন্ন ভিন্ন দেখা গেছে। এফডিআরে বিভিন্ন মেয়াদে ৩ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ও বিশেষায়িত মিলে দেশের ৯টি ব্যাংকে এফডিআরে বিভিন্ন মেয়াদে ৩ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। আর সাধারণ ডিপোজিটে সুদের হার ৩ থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ পর্যন্ত।
সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংক। ব্যাংকটি তিন থেকে ছয় মাসের কম সময়ের সুদ দিচ্ছে ৭ থেকে ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ পর্যন্ত। ছয় মাস থেকে এক বছরের কম সময়ের জন্য ব্যাংকটি দিচ্ছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ, এক বছর থেকে তিন বছর মেয়াদি সময়ের সুদ সাড়ে ৭ থেকে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর তিন বছরের বেশি সময়ের ডিপোজিটের জন্য ১০ দশমিক ৬৭ শতাংশ সুদ দিচ্ছে বেসিক ব্যাংক। এছাড়া ৬ দশমিক ৩২ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত আমানতকারীদের সুদ দিচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, রূপালী, জনতা, বিডিবিএল, পিকেবি, রাকাব এবং বিকেবি।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে চতুর্থ প্রজন্মের নতুন ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে- মিডল্যান্ড, মেঘনা, পদ্মা ব্যাংক, ইউনিয়ন, মধুমতি, এসবিএসি প্রবাসী উদ্যোক্তাদের এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ও গ্লোবাল ইসলামী। এ ব্যাংকগুলোয় সাধারণ সঞ্চয় রাখলে ২ থেকে ৮ শতাংশ সুদ পাবেন গ্রাহক। মেয়াদি আমানতে মিলবে ৪ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত। চতুর্থ প্রজন্মের কিছু ব্যাংক মেয়াদি আমানতের ওপরে সর্বোচ্চ ১২ থেকে ১৩ শতাংশ সুদ দিচ্ছে গ্রাহকদের।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে এনআরবি ব্যাংক। তিন থেকে ছয় মাস সময়ের সুদ ৫ থেকে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ, ছয় মাস থেকে এক বছরের বেশি সময়ের জন্য ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদ দিচ্ছে ব্যাংকটি। তিন বছরের বেশি সময়ের আমানতের সুদ মিলছে ১২ থেকে ১৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এসএবিসি) তিন মাস থেকে তিন বছর বা তার বেশি সময়ের ফিক্সড ডিপোজিটে ৫ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে।
তিন মাস থেকে তিন বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য ৯ দশমিক ৭৫ থেকে ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ সুদ দিচ্ছে এনআরবিসি। একই পরিমাণ সুদ দিচ্ছে বেঙ্গল ব্যাংক, সিটিজেন, মেঘনা এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। মেয়াদি আমানতে ১২ শতাংশ সুদ দিচ্ছে এবি ব্যাংক। এছাড়া ৭ থেকে ১১ শতাংশ সুদ দিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, আইএফআইসি, আইসিবি, মার্কেন্টাইল, প্রিমিয়ার, উত্তরা ও ন্যাশনালসহ বেশকিছু ব্যাংক।
দেশের শরিয়াহভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ বিভিন্ন মেয়াদি সঞ্চয়ের ওপর সাড়ে ১০ থেকে ১১ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংক ১০ দশমিক ৫০ থেকে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা দিচ্ছে। এছাড়া ৯ থেকে ১১ শতাংশ মুনাফা দিচ্ছে আল-আরাফাহ্, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, শাহজালাল, এক্সিম, ইউনিয়ন, আইসিবি ইসলামিক গ্লোবাল ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।
তবে বিদেশি ব্যাংকগুলো আমানত কম সংগ্রহ করে। এ কারণে তাদের সুদহারও কম থাকে। বিদেশি ব্যাংকগুলো মেয়াদি আমানতে ৪ থেকে ৯ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। তিন বছর থেকে তার বেশি সময়ের আমানতে সাড়ে ১১ শতাংশের ওপরে সুদ দিচ্ছে কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন। ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ৬ থেকে প্রায় ৯ শতাংশ, হাবিব ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭ থেকে ১১ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সুদ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের। বিদেশি খাতের ব্যাংকটির আমানতের সুদহার ২ শতাংশ। এছাড়া এইচএসবিসি এবং ওরি ব্যাংকের সুদহার এক থেকে ৬ শতাংশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com