রংপুরের গঙ্গাচড়ায় বড়বিল ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা নূর জাহান অটো রাইস মিলের পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। মিলটি থেকে নির্গত ধুলাবালি ও রাসায়নিকযুক্ত বর্জ্যের ফলে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা চরম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি মিলের বর্জ্য ও দূষিত পানি আশপাশের কৃষিজমি ও জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নূর জাহান অটো রাইস মিল থেকে রাসায়নিক মিশ্রিত হলুদ রঙের পানি নালায় ফেলা হচ্ছে, যা আশপাশের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। এই দূষিত পানি ঘাঘট নদীতে মিশে যাওয়ায় কৃষকদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে, কারণ সেচের কাজে ব্যবহৃত পানির মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমাদের ঘরের জানালা পর্যন্ত খোলা রাখা যায় না। মিলের বর্জ্যের কারণে নালার পানি ব্যবহার তো দূরের কথা, তার দুর্গন্ধে টিকেও থাকা যায় না। ভুক্তভোগীরা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেছেন। গত ২৩ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর সহকারী পরিচালক (অফিস প্রধান) কমল কুমার বর্মন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন তদন্ত করে মিল কর্তৃপক্ষকে ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দেন। কিন্তু ২০ দিন পার হলেও মিল কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নূর জাহান অটো রাইস মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (অফিস প্রধান) কমল কুমার বর্মন বলেন, “স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত করেছি এবং মিল কর্তৃপক্ষকে দূষণ নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রতিবেদন সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে, এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সহকারী একান্ত সচিব আশিকুর রহমান সমী বলেন, “পরিবেশ দূষণের ব্যাপারে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। নূর জাহান অটো রাইস মিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। স্থানীয় জনগণ দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন, যাতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা পায়। তারা মিলটির দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজনে মিলটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।