সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক নিয়োগের আবেদন গত ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনলাইনে শুরু হয়েছে। যা চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে এরই মধ্যে ৯ লাখেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) আশা করছে, এবার সবমিলিয়ে কমপক্ষে ১৫ লাখ আবেদন জমা পড়বে। সাধারণরা বলছেন, দেশের সব চাকরিপ্রত্যাশীরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায়। এ কারণে শিক্ষক পদে চাকরি পেতে কোমড় বেঁধে নেমেছেন সবাই। আবার কেউ বলছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক পদে বেতন-ভাতার সঙ্গে সঙ্গে মর্যাদাও এখন আগের তুলনায় বেড়েছে। এর ফলে তরুণদের মধ্যে প্রাথমিকে শিক্ষকতা নিয়েও আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
তবে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন, মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন চাকরির পরীক্ষা বন্ধ থাকায় আবেদনের এই ‘কাড়াকাড়ি’। আর চাকরিপ্রত্যাশীরা বলছেন, গ্রেড উন্নীত হওয়ার কারণেই সহকারি শিক্ষকের পদে চাকরিতে আগ্রহী হচ্ছেন তারা। মোসাদ্দেক নামে এক চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ‘এবারই প্রথম প্রাথমিকের শিক্ষক পদে পরীক্ষা দিচ্ছি। করোনার কারণে একটা বছর বসেছিলাম, কোথাও পরীক্ষা দিতে পারিনি। এ সময়ে শিক্ষকদের গ্রেডও বাড়িয়েছে সরকার। পরবর্তীতে হয়তো আরো বাড়ানো হতে পারে। এজন্যই আবেদন করেছি।’
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) সিনিয়র সহকারি সচিব আতিক এস বি সাত্তার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত ৯ লাখ ৬০ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৫ লাখের বেশি আবেদন আসতে পারে। শেষের দুই সপ্তাহে বেশি আবেদন হতে পারে।’ ‘আবেদন শেষে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে’ বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সরকারি প্রাথমিকে এবার সব মিলিয়ে সাড়ে ৩২ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। দেশের ইতিহাসে সরকারি কোনো চাকরিতে এটিই বৃহত্তম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। শূন্য আসনের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা বেশি হলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারি শিক্ষকদের বেতন হবে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর গ্রেড ১৩ অনুযায়ী ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা। তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবেন না। প্রাথমিকের শিক্ষক পদে আবেদন করতে হলে শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রার্থীদের বয়স ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং গত ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত ৩২ বছর। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। আগামী ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা। এবারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারাদেশে ২৫ হাজার ৬৩০ জন প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ছয় হাজার ৯৪৭টি শূন্য পদে সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।