শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১০ পূর্বাহ্ন

“বন্ডের কাপড় ও সুতা লোকাল বাজারে অবৈধভাবে বিক্রি” দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে!

দেলোয়ার হোসেন রশিদী (সাতকানিয়া) চট্টগ্রাম :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

লোকাল বাজারে অবৈধভাবে বন্ড এর কাপড় ও সুতা বিক্রি হচ্ছে যা দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বন্ড সুবিধার পণ্য কালোবাজারে বিক্রি এবং চোরাকারবারি ঠেকাতে গত ১ বছরে অনেক ঝটিকা অভিযান চালিয়াছে ঢাকা ও চট্রগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনার। এতে অনেক প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকার অনিয়ম এবং দুনীতি উদঘাঠন করা হয়েছে, তবুও ঠেকানো যাচ্ছেনা এই অসাধু চক্রকে, কারণ এই অসাধু চক্র প্রশাসনের বিভিন্ন অবৈধ সহযোগিতার মাধ্যমে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্যে তারা সয়লাব করেছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজার। পুরান ঢাকার ইসলামপুর, কেরানীগঞ্জ, নয়াবাজার, নরসিংদী বাবুরহাট, চকবাজার মোড়ে এবং চট্রগ্রাম ই,পি,জেড ও টেরী বাজারে এবং দেশের আরো বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে বন্ড সুবিধার আমদানি করা পণ্য। আর বন্ডের পণ্যের সংঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান। এ কারনে প্রত্যাশিত রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় বাধাগ্রস্থ হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা। অসাধু চক্রের এমন অপতৎপরতা মোকাবেলায় দীর্ঘদিন দরে ভোক্তভোগি দেশীয় শিল্প কারখানার মালিকরা বন্ড সুবিধার মালিকদের অপব্যবহার রোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তুসংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনধরনের আইনি পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ দেশিয় ভোক্তভোগি শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর। কখনো কখনো এক বন্ডের ফ্যাক্টরির মাল লোকাল ফ্যাক্টরিতে নিয়ে গিয়ে অবৈধভাবে চালান দেয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নরসিংদীতে এই অসাধু চক্রে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে কিন্ত তার মধ্যে নোমানগ্রুপসহ বেশ কয়েকটি হলেন অন্যতম। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা গুলো পুনঃ রপ্তানির শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য আমদানির সুযোগ পায়। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এসব শুল্কমুক্ত কাঁচামাল বা পণ্য এনে অবৈধভাবে অপসারণের মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। বন্ড সুবিধায় আনা কাপড়, সুতা, প্লাস্টিক দ্রব্য, কাগজ পণ্য,ডুপ্লেক্স বোর্ড, কার্ড বোর্ড, ইত্যাদি দ্রব্য ও পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ই,পি,জেড ও কাস্টমস সূত্রে যানা যায়, সম্প্রতি বন্ড সুবিধায় শুল্কমুক্ত দ্রব্য পণ্য আমদানি করে ব্যাপকভাবে বড় বড় চালান কালো বাজারে বিক্রি করতেছে। নোমানগ্রুপের জাবের এন্ড জুবাইর ও নাইস ডেনিম, এর বন্ডের সুতা ও কাপড় বিভিন্নভাবে সরাসরি টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রী করে যাচ্ছে এই বন্ডের কাপড় ও সুতার চালান কখনো লোকাল ফ্যাক্টোরির নামে চালান দিয়ে, কখনো ভুয়া চালান দিয়ে বা কখনো একই চালান একাধিক বার ব্যাবহার করে আবার সরকারি ভেট চালানে দেখায় ৩ ভাগের ১ ভাগ এবং বন্ডের অপব্যাবহার করে।এই অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারি হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। যেটা দেশের জন্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্তরায়।ইসলামপুর ও কেরানীগঞ্জের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী সূত্রে যানা যায়, নোমান গ্রুপের নাইস ডেনিম টেন্ডার দিয়ে বন্ডের সুতা ও কাপড় বিক্রি করে যাচ্ছে যা দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। এভাবে নোমানগ্রুপ ও অন্যান্য অসাধু প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ডের অপব্যবহার করে টেন্ডার দিয়ে লোকাল বাজারে পণ্য বিক্রি করে আসছে। দেশে বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার ৬০০ টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের নামে বন্ড লাইসেন্স থাকলেও সবাই অনিয়ম ও বিভিন্ন দুর্নীতি করে যাচ্ছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে বলা হচ্ছে, বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহারের বিষয়ে আমরা সচেষ্ট আছি।কিন্ত উপরের মহল ও সরকারি কিছু কর্মকর্তার সহযোগীতায় আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে এই অসাধু চক্র ও নোমানগ্রুপ এবং অন্যান্যরা বিদেশ থেকে আমদানি কৃত বন্ডের মালামাল চট্রগ্রাম কাষ্টম দিয়ে বিভিন্ন সিএন্ডএফ লাইসেন্স এর মাধ্যমে বেশিদামি মালামাল কমদামি চালান দেখিয়ে মালামাল বাহির করছে যাতে কাষ্টমস কর্তৃপক্ষ জড়িত ফলে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের তৎপরতায় বন্ডের অপব্যবহার মাঝেমধ্যে কিছুটা কমে আসলেও বর্তমানে তা বেড়ে গেছে ব্যাপকহারে। এইসব বিষয়ে রহস্যজনকভাবে প্রশাসন নীরব রয়েছে। সরেজমিনে একাধিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,তারা নিজেরা খোলাবাজার থেকে পণ্য নিয়ে থাকেন স্বীকার করলেও কে বা কারা ওই পণ্য আনে তা ভয়ে বলতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, খোলাবাজারে পণ্য বিক্রি বন্ধ হলে আমরা যারা সৎ ব্যবসায়ী আছি তারা শান্তিতে ব্যবসা করতে পারবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com