পাবনায় শিল্পপতি অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু আওয়ামীলীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে নগ্ন হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে জেলা আওয়ামীলীগ ও সকল অংগ সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছে। গতকাল শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে খন্ড খন্ড মিছিলসহ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশগ্রহন করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে পিন্টু চৌধুরীকে কুটুক্তিমুলক বিভিন্ন শ্লোগানে শ্লোগানে মিছিল মুখরিত হয়ে উঠে। জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বাবুর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, যুগ্ন সম্পাদক ও সাবেক পিপি এ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন বিল্লু, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন, সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেন সন্টু, সদর উপজেলার চেয়ার ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোশাররফ হোসেন, জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, দপ্তর সম্পাদক এ্যাডভোকেট আহাদ বাবু, প্রচার সম্পাদক কামিল হোসেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহিন, পৌর সভাপতি এ্যাডভোকেট তসলিম হাসান সুমন, সাধারন সম্পাদক মামুন হোসেন, পৌর সাংগঠনিক মেহেদী হাসান এপ্রিল, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রাকিব হাসান টিপু, সহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সকল নেতৃবৃন্দ। প্রধান বক্তা বেলায়েত হোসেন বিল্লু বলেন, পিন্টু চৌধুরী, রাইফেল ক্লাব, বাস মালিক সমিতি, বনমালি ইনষ্টিটিউট, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরী, চেম্বার অব কমার্সসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান দখল করে তিনি তার কর্মচারী দ্বারা পরিচালনা করে থাকেন। তিনি সর্বশেষ পাবনার ঐতিহ্য মুক্তমঞ্চ দখল করে সেটা তিনি মুক্তমঞ্চকে অমুক্তমঞ্চ বানিয়েছেন। সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর মুরাল তৈরী করে সেটা প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হলো, অথচ সেটা সবার জন্য উমুক্ত না করে তালা লাগিয়ে বঙ্গবন্ধুকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমরা মুক্তমঞ্চের তালা ভেঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করে সবার জন্য উম্মুক্ত করে দেব। যাতে পাবনার গণ মানুষ বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে উপস্থিত হতে পারে। বক্তারা পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সনি বিশ্বাসকে হাইব্রিড উল্ল্যেখ করে ত্যাগী নেতাদেরকে মনোনয়ন দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জোর দাবী জানান। সেই সাথে জেলা আওয়ামীলীগে শিল্পপতির অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধের আহবান জানান। বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম পাকন প্রশ্ন রেখে বলেন, পিন্টু চৌধুরী কিসের মুক্তিযোদ্ধা? তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন। মুজিব বাহীনির প্রধান বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের সাথে আমরা বিভিন্ন সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছি। সুজানগরে বিভিন্ন স্থানে পাকিস্থানী বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করেছি, পিন্টু চৌধুরীকে তো কোথাও কোনদিন যুদ্ধ করতে দেখেনি। একজন মাদক সেবনকারী ও ব্যাবসায়ী হাবিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধার কমান্ডার সেজে পাবনার মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান নষ্ট করেছে। এই হাবিবুর রহমানই পিন্টু চৌধুরীকে মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট দিয়েছে। এই জন্য পিন্টু চৌধুরী হাবিবুর রহমান হাবিবকে পাবনা জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি বানিয়েছে। বীরমুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সাংসদ মকবুল হোসেন সন্টু বলেন, আমি পিন্টু চৌধুরীর বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ করায় সে আমার বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। আমার উপর হামলা করে আহত করেছে। তিনি বলেন, আমি তো সুজানগরে সম্মুখ যুদ্ধে ছিলাম। কোন দিনতো তার নাম শুনিনি। বীরমুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট বাবলু বলেন, হাবিবুর রহমানের মত লোক যখন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হয়, তখন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আর কোন সম্মান থাকে না। অনুষ্ঠানের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবু বলেন, পিন্টু চৌধুরী মাতাল হাবিবকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বানিয়ে তিনি পাবনায় বিভিন্ন সময় ফায়দা হাসিল করেছেন। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনি আর পাবনাকে নিয়ে কোন খবরদারি করতে পারবেন না। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা পাবনার নিয়ন্ত্রন করবে। সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দালাল বা হাইব্রিডদের নৌকা প্রতিক না দিতে অনুরোধ করেন। পাবনায় প্রকৃত আওয়ামীলীগদের মুল্যায়ন করে নৌকা প্রতিক দিয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ করে দিতে আহবান জানান। সভাপতি সমাপনি বক্তব্যের শেষে সবার উদ্দেশ্যে কবিতা পাঠ করে প্রতিবাদ সমাবেশের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।