কারাবিধি লঙ্ঘন করে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এ হল-মার্ক কর্মকর্তা তুষার আহমেদের দর্শনার্থীর সাক্ষাতের ঘটনায় বরখাস্ত হয়েছেন কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার, জেলার ও ডেপুটি জেলারসহ ১১ জন। এছাড়া আরো সাতজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের ‘প্রমাণ’ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে জড়িত অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে কারা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত চিঠি কারা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত করা হয়েছে তখনকার জ্যেষ্ঠ জেল সুপার রত্না রায়, জেলার নূর মোহাম্মদ মৃধা এবং ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েনকে। বরখাস্ত অন্যদের মধ্যে ছয়জন কারারক্ষী, একজন সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর রয়েছেন। এর আগে গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এই ঘটনায় কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের পোশাক পরে স্বাচ্ছন্দে ঘোরাফেরা করছিলেন কারাবন্দী হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই বাইরে থেকে বেগুনি রংয়ের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে।
পরে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে অপর দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে রিসিভ করেন ডেপুটি জেলার সাকলাইন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান সাকলাইন। এর আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে প্রবেশ করতে দেখা যায়। ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।