মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন

গঙ্গাচড়ায় মরে যাচ্ছে তিস্তার শাখা মানাস নদী

আব্দুল আলীম প্রামানিক গঙ্গাচড়া (রংপুর) :
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কালের আবর্তনে মরে যাচ্ছে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার শাখা মানাস নদী। পানি শূন্য হয়ে পড়ায় নদীর বুকে আবাদ হচ্ছে বিভিন্ন ফসল। লাগানো হয়েছে গাছ। হয়তো বা কয়েকটি বছর পরে স্মৃতির পাতা থেকে হারিয়ে যাবে মানাস নদী। স্থানীয় লোকজন স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে হয়তো বলবে এইখানে এক নদী ছিল। নদীটি আর নেই। এক সময় ঘর থেকে বের হয়েই শোনা যেতো নদীর কলকল ধ্বনি। রং-বেরংয়ের পালতোলা নৌকা প্রকৃতিতে যোগ করতো অপরূপ সৌন্দর্য্য। মাঝি-মাল্লার ভাটিয়ালী গানে মুখরিত থাকতো সারাক্ষণ। দিরভর জনসাধারণের পদভারে জমে উঠতো নদীর ঘাটগুলো। এ সবই এখন শুধু স্মৃতি। নদীর বুকজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ। লোকজন জবর দখল করে আবাদ করছে। নদী দুটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে বেকার হয়ে পড়েছে শত শত মৎস্যজীবী। অভিজ্ঞ লোকজনের ধারণা নদী দুটি খনন করা হলে মৎস্য চাষসহ আবাদী জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা যাবে। কৃষকরা উপকৃত হবে। সাশ্রয় হবে অনেক টাকা। জানা যায়, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার কুজিপাড়া গ্রামে তিস্তার শাখা নদী হিসেবে মানাস নদীর উৎপত্তি। গঙ্গাচাড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী গজঘন্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ বন্দরের পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পীরগাছা উপজেলায় প্রবেশ করেছে। এরপর মানাস নদী আলাইকুড়ি নদীকে সাক্ষাৎ দিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ভিতর দিয়ে যমুনায় পড়েছে। মানাস নদী ৮৮ কিলোমিটার জুড়ে শুকিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এক সময় এ নদী উপর দিয়ে পাল তোলা নৌকা চলতো। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসতো ব্যবসা করার জন্য। নদীপথে বিভিন্ন প্রকার পণ্য সরবরাহ করতো লোকজন। বর্ষা শেষ হতে না হতেই সেই নদীর পানি প্রবাহ এখন শূন্যের কোঠায়। গজঘণ্টা ইউপি চেয়ারম্যান ডা. আজিজুল ইসলাম জানান, নদীটি খনন করার জন্য একটি প্রকল্প দেওয়া আছে। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে সরকার নদীটি খনন করলে কৃষকরা কৃষি কাজে ব্যাপক সুবিধা পাবে। সেই সঙ্গে মৎস্য চাষ করা যাবে। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে মানস নদী খনন করা শুরু হয়েছিল। জমি জটিলতার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভারত একতরফাভাবে পানি প্রবাহ প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নদীটির গুরুত্ব এখন নেই। নদী খননের জন্য ছোট একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। সরকার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে নদীটি খনন করলে এলাকার মানুষের অনেক উপকারে আসবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com