গত এক দশক ধরে বাংলাদেশের নিজস্ব ভূমিতে গণতন্ত্রের শেকড় যাতে না গজাতে পারে এজন্য আওয়ামী সরকার সকল শক্তি নিয়োগ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল শবিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, দেশে বিদেশের গণমাধ্যমে দেখেছেন-ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের গবেষণায় যে প্রকাশ করেছে তাতে স্বৈরতান্ত্রিক বা কর্তৃত্ববাদী শাসনের তালিকায় আছে বাংলাদেশ। গত এক দশক ধরেই বাংলাদেশের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হয়নি। এক দশক ধরেই বাংলাদেশের নিজস্ব ভূমিতে গণতন্ত্রের শেকড় যাতে না গজাতে পারে এজন্য আওয়ামী সরকার সকল শক্তি নিয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, সরকার গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও লাখো লাখো মিথ্যা মামলার ছড়াছড়ি শুধু নয়, বিরোধী দলকে দমন ও গণমাধ্যমের কন্ঠরুদ্ধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নানা কালাকানুন করে অমানবিক নিষ্ঠুরতার সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে শুধু বিরোধী দল ও মত নয়, সাংবাদিকদেরও কোন নিরাপত্তা নেই, ডিজিটাল জগতে স্বাধীনভাবে প্রবেশের কোন অধিকার নেই। এদের শাসনামলে ৫০ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। গতবছরও দু’জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন, ৭৮ জনকে মেরে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে, ১৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। তাই বিএনপিসহ বিরোধী দলের কোন সমাবেশের কথা শুনলেই ওবায়দুল কাদের সাহেবদের কাঁপুনি ধরে। কারণ প্যান্ডোরাস বক্স খুলে গিয়ে সকল সত্যগুলো পুনরায় বের হতে থাকবে। সুতরাং সুশাসন নয়, আওয়ামী সরকার সন্ত্রাস বিতরণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রবিনাশী এক সর্বনাশা আওয়ামী দৈত্য মানুষের সকল অধিকার, মানবিক মর্যাদা, মানবিক সাম্য সকল কিছু ভুলুন্ঠিত করে নিরাপদে থাকার জন্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রেখেছে। তিনি বলেন, একটি মূল্যবান কথা আছে-মানুষ সবার ঘরে ঘরে জন্মায়/কিন্তু মনুষ্যত্ব সবার ঘরে ঘরে জন্মায় না। আওয়ামী সরকার মনুষ্যত্বকে জলাঞ্জলি দিয়েছে বলেই আজ তারা রাজনৈতিক দল থেকে ডাকাতের দলে পরিণত হয়েছে। অগণতান্ত্রিক সরকারের দোসররা কখনোই গণতান্ত্রিক শক্তির মিত্র হতে পারে না বলেই বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে গৃহবন্দী করে রেখেছে। আজ তার এই বন্দীত্বের জন্য সারাজাতি বেদনায় ভারাক্রান্ত। এই ঘোর তিমিরঘন পরিবেশের অবসান ঘটবেই। আওয়ামী-লাঠিপেটা গণতন্ত্রের কবর রচনা হবেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জনগণ মুক্ত করবেই।