সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত: বিএনপি’র তীব্র প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় পদক বাতিলের সিদ্ধান্তকে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি মনে করেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শামিল।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার এক সভায় বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহায়তা করার দায়ে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই প্রতিক্রিয়া জানান। বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে আমরা এখনো জানি না। যদি সরকার এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তা হবে দুর্ভাগ্যজনক। এটা সম্পূর্ণভাবে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হবে। কারণ, মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান তাঁর শত্রুরাও স্বীকার করেন। সেখানে যদি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা হবে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অসম্মান ও অবমাননা।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নামেই জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, এটা অস্বীকার করতে পারবে না। তিনিই প্রথম সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করেন এবং তিনি প্রথম বিদ্রোহ করেন কালুরঘাট থেকে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, জেড ফোর্সের কমান্ডার ছিলেন, এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে?’ তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকারই ক্ষমতায় ছিল। তারাই তো জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে জিয়াউর রহমানকে সর্বোচ্চ খেতাব বীর উত্তম উপাধি দিয়েছিল। এখন অন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শামিল হবে। জনগণ এ সিদ্ধান্ত মানবে না।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বীর উত্তম’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল। তিনি বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর তাঁর রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানসহ এই পাঁচজন এবং তাঁদের পরিবার মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জামুকার ৭২তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জামুকার বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তের বিষয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির কাকরাইলের কার্যালয়ে কথা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য জিয়াউর রহমানকে দেওয়া রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। সংবিধানের মূলনীতি বাতিল করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতাবিরোধী লোকজনকে নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশত্যাগে সহায়তা করেছেন এবং গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করেছেন।
হঠাৎ এখন কেন জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হলো এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘নিয়ম হচ্ছে, যারা মারা যায় তাদের বিরুদ্ধে কিছু করা (ব্যবস্থা) যায় না। সে জন্য জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক, মাহবুবুল আলম চাষীর বিরুদ্ধে এতদিন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। এ রকম আরো যারা রয়েছে, তাদের বিষয়েও জামুকার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এদের সকলের পদক, সুযোগ-সুবিধা বাতিল করা হবে। আপাতত জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক ও মাহবুবুল আলম চাষীর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্বে অনেকেরই নোবেল পুরস্কার, ডক্টরেট ডিগ্রি প্রত্যাহার করা হয়। তাদের হয়তো মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাদ দেওয়া যাবে না, কিন্তু খেতাব বাদ যাবে, অপরাধের জন্য শাস্তি পাবে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com