সংসদীয় কমিটির পর্যবেক্ষণ
গ্যাসের অবৈধ সংযোগ কমার বদলে বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাড়ার পেছনে বিভিন্ন গ্যাস সঞ্চালন প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পৃক্ততা থাকতে পারে বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি। গত বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের আলোচনায় বিষয়টি উঠে আসে। কমিটি প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছে। কমিটি মনে করছে, প্রি-পেইড মিটার স্থাপন হলে অবৈধ গ্যাস সংযোগের পরিমাণ কমবে। এছাড়া যেসব জায়গায় অবৈধ সংযোগ রয়েছে, তা বিচ্ছিন্নে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির সংশ্লেষ থাকলেও ছাড় না দিতে পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বণিক বার্তাকে বলেন, গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দিন দিন কমার কথা কিন্তু উল্টো তা বেড়েই যাচ্ছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। আমাদের মনে হয়েছে যতটা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা দরকার তা হচ্ছে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিতাসসহ অন্যান্য সঞ্চালন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এ কাজে জড়িত না থাকলে এভাবে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বাড়ার কথা নয়। তাদের কোনো স্বার্থ রয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।
অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিচ্ছিন্নে বিভিন্ন সময়ে জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টিও বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে। কমিটির এক সদস্য বৈঠকে প্রসঙ্গটি তোলেন। এক্ষেত্রে কোনো জনপ্রতিনিধিকে যেন ছাড় না দেয়া হয় সে পরামর্শ দেন তিনি। প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে ধীরগতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে এক শ্রেণীর লোকজনের সুবিধা কমে যাবে, যার কারণে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন কাজে গতি আসছে না। গ্যাসের বকেয়া বিল বন্ধে প্রি-পেইড মিটার সংযোগ দ্রুততম সময়ে চালু করার ব্যাপারে কমিটি থেকে জোর সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে কমিটির সভাপতি বলেন, অনেক প্রকল্প নেয়া হয় কিন্তু সময়মতো বাস্তবায়ন হয় না। এতে প্রকল্পের ব্যয় যেমন বেড়ে যায়, তেমনি জনগণ প্রত্যাশিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। এজন্য আমরা এ বিষয়ে সতর্ক হতে বলেছি। আর ভবিষ্যতে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, সেখানে যেন আগেই থেকেই সঠিক পরিকল্পনা করে নেয়া হয়। যাতে বার বার সময় বাড়াতে না হয়। কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকারের বৈঠকে কমিটির সদস্য মো. আবু জাহির, মো. নূরুল ইসলাম তালুকদার, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর, মোছা. খালেদা খানম, বেগম নার্গিস রহমান ও মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস অংশগ্রহণ করেন।