গত ১১ দিন ধরে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকাদান কার্যক্রম চলছে। ১১ দিনে টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন। আর এরইমধ্যে জনসাধারণের মধ্যে মাস্ক নিয়ে শিথিলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। টিকা নিলে মাস্ক পরতে হবে না বলেও জানাচ্ছেন অনেকে। মাস্কের প্রতি এমন উদাসীনতাকে উদ্বেগজনক মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দেশে সংক্রমণ এখন নিম্নগামী। তারপরও মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, নিয়মিত বিরতিতে হাতধোয়াসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যবিদরা। প্রসঙ্গত, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫ জন এবং শনাক্ত হয়েছেন ৩৯১ জন। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন। পুরুষ এক লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৬ জন আর নারী ৯৭ হাজার নয়জন। করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর এ তথ্য জানায়।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মাস্ক পরতে হবে, এর বিকল্প এখনও নেই।
বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে ফ্লাইট আসছে। তাদের মাধ্যমে দেশে আবার ছড়াতে পারে। মানুষের মধ্যে মাস্ক নিয়ে অসেচতনতা বেড়েছে, এটি একেবারেই অনুচিত মন্তব্য করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘একজনকে দেখে যেন আরেকজন মাস্ক ছেড়ে না দেয় সেদিকেও সচেতনদের নজর দিতে হবে। আর টিকা নিয়ে নিজে সুরক্ষিত থাকলেও কিন্তু ওই ব্যক্তি বাহক হতে পারেন। তার মাধ্যমে অন্য কেউ আক্রান্ত হতেই পারে।’
মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেওয়ার পর ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী ব্যবস্থা (অ্যান্টিবডি) তৈরি হতে অন্তত দুই সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও একজন ব্যক্তি ভাইরাসের পোষক হতে পারেন। তাই ভ্যাকসিন নিলেও মাস্ক পরতে হবে। এ টিকার কার্যকারিতা কতদিন থাকবে বা কতজনকে টিকা দিলে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে এসব এখনও অজানা।’ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা কতদিন থাকবে এসব তথ্য আমাদের কাছে নেই জানিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ চিন্ময় দাস বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানলে কেবল করোনাভাইরাস ঠেকানো নয়, অন্য উপকারও রয়েছে। আর সবাইকে যেহেতু একসঙ্গে ভ্যাকসিন দেওয়া যাচ্ছে না তাই স্বাস্থ্যবিধি মানা জরুরি।
একই মত দেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর। তিনি বলেন, যতক্ষণ না বিশ্বের ৭০-৮০ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিনেটেড না হচ্ছে ততক্ষণ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হয়। কারণ যে কোনও দেশে যে কোনও সময় আবার আউটব্রেক হতে পারে।-বাংলািিট্রবিউন