দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাস (জুলাই-জানুয়ারি) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবি আর) নির্ধারিত এই ৭ মাসে বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ১৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। রাজস্ব আহরণের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার অধিক রাজস্ব আহরণ সম্ভব বলে আশা হিলি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের।
হিলি স্থল শুল্কস্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর থেকে এনবি আর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ৩১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সেই মোতাবেক অর্থবছরের শুরুর মাস জুলাইয়ে বন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগস্টে ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে ৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ২০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। অক্টোবরে ১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। নভেম্বরে ৩১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ২৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে ৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ২২ কোটি ২১ লাখ টাকা। জানুয়ারিতে ২৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিপরীতে আহরণ হয় ২০ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিগত কয়েকবছর ধরে হিলি স্থলবন্দর থেকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বাড়তি রাজস্ব আহরণ সম্ভব হলেও এই বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। এর মধ্যে মূল হলো, বন্দরের একমাত্র সড়কটি অপ্রসস্ত ও ভাঙ্গাচুরা হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে যানজট লেগেই থাকে। এ কারণে চাহিদা থাকলেও বাড়তি পণ্য আমদানি করা সম্ভব হয় না। এমনকি বর্তমানে চাল নিয়ে অস্থিরতা চলছে সেই চালের ট্রাকও বেশি প্রবেশ করানো সম্ভব হচ্ছে না যানজটের কারণে। এছাড়া বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাড়তি মূল্যে শুল্কায়ন করা, খালাসে বিলম্ব হওয়ার জটিলতা রয়েছে। এছাড়া এই বন্দর দিয়ে গাড়ির চাকা অনুযায়ী শুল্কায়নের প্রথা চালু থাকায় দীর্ঘদিন ধরে ফল আমদানি বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করা হলে এই বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি আরও বাড়বে। এতে শুল্ক আহরণের পরিধিও বাড়বে।’
হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম বলেন, ‘অনিয়মতান্ত্রিক সবকিছু পরিহার করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দু’দেশের মাঝে পণ্য আমদানি-রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের সব কার্যক্রম পরিচালনা করায় বাড়তি রাজস্ব আহরিত হচ্ছে। একইসঙ্গে বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় এটি সম্ভব হয়েছে। বন্দর দিয়ে পাথরসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ও দীর্ঘদিন পর চাল আমদানি শুরু হওয়ায় রাজস্ব আহরণ বেড়েছে। বর্তমানে যে হারে রাজস্ব আদায় বিরাজমান রয়েছে, তাতে করে আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেটি অর্জন করবো।’