নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মোট আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যার ঘনত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই উপজেলার মোট জমির পরিমাণ ৫২,৭০৭.০৫ একর। ২০১৩ সালের জরিপ অনুসারে এই উপজেলার মোট পরিবার ৫৬,৩৪৫টি। উপজেলা কৃষি অফিসের জরিপ অনুসারে উপজেলার আয়তন বা জমির পরিমাণ আরো কম। এ থেকে প্রমাণিত হয় উপজেলার আয়তন বা জমির পরিমাণের চেয়ে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি এবং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তার পরেও উপজেলায় কৃষি জমি সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। জনসংখ্যা যেভাবে হু হু করে বেড়ে চলেছে কৃষি জমির উপর জনসংখ্যার চাপ ততই বাড়ছে। মানুষের প্রয়োজনে খাল, বিল, ডোবা, নালা ভরাট করে ফসল ও বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। নতুন নতুন স্থাপনা দোকানপাট, বাড়িঘর নির্মাণে একগ্রাম আরেক গ্রামের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ভিটে জমি প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। একখন্ড জমি এখন একাধিক অংশে ভাগ হয়েছে। ফলে জমি সংক্রান্ত বিরোধ এই উপজেলায় বেড়ে গেছে। কৃষি জমি সংরক্ষণের প্রয়োজন মনে করছে না কেউ। কৃষি জমি নিষ্ট করে যত্রতত্র গড়ে উঠছে ইটভাটা। উন্নয়নের নামে খাল বিল ভরাট করে তৈরি করা হচ্ছে আবাসন প্রকল্প। সমাজের এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি বা কর্মকর্তার আবাসন আগ্রাসীর শিকার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিলগুলো। এতে ধংস হচ্ছে বিলের অস্তিত্ব। সেই সাথে সংকটের মুখে প্রাণীকূল। কৃষি জমি জরিপ অনুসারে এই উপজেলায় জনসংখ্যা যেভাবে বাড়ছে কৃষি জমি তার চেয়ে অধিকহারে হারিয়ে যাচ্ছে। যত্রতত্র নীতিমালা উপেক্ষা করে চলছে বেপরোয়া অবৈধ পুকুর খনন। চলছে ইটভাটায় মাটি বিক্রির ধূম। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিস সূত্র জানায়, এই উপজেলায় প্রতিবছর গড় জন্ম হার সাড়ে ১৫। সে হিসেবে প্রতি বছর অধিক হারে জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে চলেছে। কিন্তু উপজেলার আয়তন বা জমি বাড়ছে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. হাসান আলী বলেন, কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই। কৃষি জমি সংরক্ষণের উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করছেন উপজেলার সচেতন মহল।