রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

ইউএনওদের উপর ক্ষুব্ধ জামুকা, যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন চায় দ্রুত

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১

২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের ১১২ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাইসংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। তারা বলেছে, জামুকার সুপারিশবিহীন গেজেট যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তিন কর্মদিবস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সব উপজেলা থেকে এসব প্রতিবেদন পাঠানো হয়নি। ফলে সরকারের ২৬ মার্চের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের যে পরিকল্পনা ছিল, তাও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। গত রোববার ই-মেইলে সারা দেশের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে এই নির্দেশের চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আদেশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নির্ধারিত ছকে জামুকায় ই-মেইলে প্রতিবেদনের পিডিএফ অথবা ডক ফাইল অথবা হার্ড কপি পত্রবাহক মারফত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জামুকা থেকে ইউএনওদের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘জামুকার সুপারিশবিহীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিত করতে নির্ধারিত ছকে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হওয়ার অনধিক তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত অনেক উপজেলা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি, যা দুঃখজনক। প্রতিবেদন না পাওয়ার কারণে একদিকে যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বেসামরিক গেজেট নিয়মিতকরণ কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে, অপরদিকে উপজেলা পর্যায়ে নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। এটি কোনোক্রমেই কাম্য নয় এবং আগামী ২৬ মার্চ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।’ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের সুপারিশ ছাড়াই ২০০২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৪৯১ উপজেলায় ৩৯ হাজার ১৬২ জনের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ‘বেসামরিক গেজেট’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। পরে তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় গত বছর যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় জামুকা। এরপর গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে দুই দফায় যাচাই-বাছাই করা হয়। এর মধ্যে দেশের ৩৭৯ উপজেলার ১৬ হাজার ৬৯৩ জনের সুপারিশ করে যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
জামুকার মহাপরিচালক জহুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কাল বিকেলের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে যেটুকু যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হয়েছে, সেই তথ্য দিয়েই প্রতিবেদন পাঠাতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখতে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ২০০২ সালে জামুকা আইন করা হয়। এ আইনে বলা আছে, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, সনদ ও প্রত্যয়নপত্র প্রদানে এবং জাল ও ভুয়া সনদ ও প্রত্যয়নপত্র বাতিলের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠাবে জামুকা।’
জামুকার শর্ত অনুযায়ী, দেশের ভেতরে প্রশিক্ষণ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অবশ্যই পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধ করার সপক্ষে তিনজন সহযোদ্ধার (ভারতে প্রশিক্ষণ নেওয়া) সাক্ষ্য দিতে হবে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বরের পর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের এ ক্ষেত্রে বিবেচনায় (সাক্ষী হতে পারবেন না) নেওয়া হয়নি। দেশে বর্তমানে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৩৩ হাজার। তবে আইনি জটিলতার কারণে ভাতা পেতেন ১ লাখ ৯৩ হাজার। এর মধ্যে ১ লাখ ৮০ হাজার জনের নাম ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমে (এমআইএস) যুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে লাল মুক্তিবার্তা, ‘ভারতীয় তালিকা’ ও ‘গেজেট’। নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রমাণের জন্য ৩৩ ধরনের কাগজপত্র রয়েছে।
২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন না পেলে করণীয় কী হবে? এ প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।-শীর্ষনিউজ২৪.কম




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com