বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আজ একটি ঐতিহাসিক দিন, যে দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মের মধ্যদিয়েই বাঙালি জাতির স্বাধীনতার বীজ বপন হয়েছিল। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহরের বাংলা স্কুল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু জীবনের ১৩টি বছর অন্ধকার কারাগারের প্রকোষ্ঠে কাটিয়েছিলেন। একাধিকবার তিনি ফাঁসির মঞ্চে গিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন, কিন্তু আপোষ করেননি। তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আপোষহীন একজন নেতা ছিলেন। সর্বপরি বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা পেত না।
তিনি আরো বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণের মধ্যদিয়ে তিনি বাঙালি জাতিকে একত্রিত করেছিলেন এবং তিনি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করেছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন বিচক্ষণ নেতা পৃথিবীতে তার মতো নেতা বিরল। ৭ মার্চের ভাষণ আজকে বিশ্বে ইউনেস্কো কর্তৃক অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যা বিশ্বাস করতেন তাই করতেন এবং সেই বিশ্বাসের সাথে তিনি কখনো আপস করেননি। যেই সরকারই পাকিস্তানের ক্ষমতায় এসেছে তারাই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কারাগারে যখন বন্দি, তখন তাকে ফাঁসি দেয়ার জন্য কবরের পাশে দাঁড় করানো হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, কবরকে আমি ভয় পাই না। আমি জানি তোমরা আমাকে ফাঁসিয়ে দেবে। কিন্তু আমি এও জানি বাংলার দামাল ছেলেরা হাসিমুখে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারে। সেই বাঙালি জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। শুধু বলেছিলেন, আমাকে ফাঁসিয়ে দেয়ার পরে এই কবরে নয়, আমার লাশটা বাংলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিও।
বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মদিনে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাকে পাশে রেখেছিলেন তাই আমি চিরঋণী। এই ঋণ আমি কখনো শোধ করতে পারবো না।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সচিব প্রবীণ এই নেতা আরো বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনা করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন এবং নিজেও মর্যাদাশালী হয়েছেন। যারা একদিন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলতো, বাংলাদেশ তলাবিহীন হবে ঝুড়ি, আজকর তারাই বলছেন বিস্ময়কর উত্থান বাংলাদেশের। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জুলফিকার আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মমিন টুলু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জান মনির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, এনামুল হক আরজু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম গোলদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আলী নেওয়াজ পলাশসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।