শিগগিরই আসছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ‘বায়োপিক’। শনিবার লাইভে একথা জানিয়েছেন সাকিব আল হাসান নিজেই। তবে করোনা মহামারির কারণে এ ‘বায়োপিক’র কাজ স্থগিত করা হয়েছেও বলে জানিয়েছেন তিনি।
সাকিব আল হাসান বলেন, ‘বায়োপিক’ এর কাজ বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিল। গল্পটিও প্রায় প্রস্তুত ছিল। তবে করোনার কারণে এখন সবকিছু ঝুলে আছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এতদিনে সম্ভবত কাজ শুরু হয়ে যেত। তার ভাষ্যমতে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আবার শুরু করবেন বায়োপিকের কাজ।
ক্রিকেটারদের বায়োপিক নতুন কিছু নয়। এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন টেন্ডুলকর এবং আজহারউদ্দীন সহ অনেক কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা সিনেমাতে প্রদর্শিত হয়েছিলেন। এ দিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজ না খেলে আইপিএলের জন্য বিসিবি থেকে আগেই ছুটি নিয়ে রেখেছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। অপেক্ষা শেষে সবার সামনে মুখলেন তিনি। সাকিব বলেন, ‘ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির জন্যই আমার আইপিএলের সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
শাকিব আল হাসানের জীবনী : কিছু বছর আগে পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে সবাই খুব সহজে হারাতে পারতো, কিন্তুকিছু বছর তারা খুব ভালো খেলে প্রায় সব দেশকেই হারিয়েছে, তারা প্রমান করে দিয়েছে যে তারা এখন আর সেই আগের সহজ টিম না। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমকে এই জায়গায় আনার জন্য অনেক খেলোয়ারের অবদান আছে কিন্তু, একটি খেলোয়ার যে তার অল রাউন্ড পারফর্মেন্স দিয়ে বিশ্বে এই দেশটা কে নতুন করে তুলে ধরেছে, এই খেলোয়ারের নাম হলো শাকিব আল হাসান।
শাকিব আল হাসান এর জন্ম ২৪শে মার্চ ১৯৮৭ তে মাগুরা জেলা, বাংলাদেশে হয়েছিল। তিনি একটি মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম খোন্দকার মাসরুর রেজা এবং তার মায়ের নাম শিরিন রেজা। এবং তার বোনের নাম জান্নাতুল ফিরদৌস ঋতু।
তিনি ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসতেন এই ভাবে খেলতে খেলতে যখন তার বয়স ১২ বছর তখন তিনি বেশ ভালো ক্রিকেট খেলতে পারতেন। এই জন্যে গ্রামে এবং তার গ্রামের বাইরে তার নাম ছড়িয়ে যাই এবং লোকাল টিম তাকে দোলে নেয়ার জন্য টাকাও দিতেন। এইরকম খেলতে খেলতে এক ম্যাচে এক আম্পায়ার তার খেলা দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই এই জন্যে তিনি তাকে ইসলামপুর পাড়া ক্রিকেট টিমের সাথে প্রাকটিস করতে বলেন। ওই টিম তার ব্যাটিং এবং স্পিন বল দেখে তারা মুগ্ধ হয়ে যাই। এর পর ইসলামপুর পাড়া ক্রিকেট টিম শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) কে দোলে নিয়ে নেই। এই টিমের হয়ে প্রথম মাঠে ভালো ব্যাটিং এবং প্রথম বলে তিনি উইকেট নেন, এইটাই হলো তার প্রথম ম্যাচ জটিতে তিনি ক্রিকেট বল দিয়ে খেলেছেন এর আগে তিনি শুধু টেনিস বল দিয়েই খেলেছেন। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি ন্যাশনাল ডোমেস্টিক লিগে খেলার সুযোগ পান।
শাকিব আল হাসান তার প্রথম দেশের হয়ে ম্যাচ খেলেন ২০০৬ সালে জিম্বাবয়ে বিরুদ্ধে খেলেন এবং এই ম্যাচে তিনি ৩০ রানে নট আউট ছিলেনএবং একটি উইকেটও নেন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর। এই ম্যাচ বাংলাদেশ জিতে যাই, এবং এই ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়ার হিসাবে তাকে গণ্য করা হয়। তিনি তার প্রথম টেস্ট ২০০৭ সালে ভারতের বিরূদ্ধে খেলেন। তিনি তার ব্যাটিং বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ের জন্য সেরা অল রাউন্ডার হয়ে ওঠে। ২০০৯ থেকে ২০১১ এবং ২০১২ তে তিনি বেস্ট অল রাউন্ডার ৫০ ওভার ম্যাচের। ডিসেম্বর ২০১১ সালে তিনি টেস্ট খেলার সেরা অল রাউন্ডার নির্বাচিত হন। ২০১৪ তে শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) ২০ ওভারের খেলায় সেরা আল রাউন্ডার হিসাবে নির্বাচিত হন। এবং ২০১৫ সালে তিনি সব ফরম্যাটের খেলাতে সেরা অল রাউন্ডার নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনি ৩৬ রান দিয়ে ৭টি উইকেট নেন, এটাই হলো বাংলাদেশের সেরা বলিং রেকর্ড যা এখনো কেও ভাঙতে পারিনি। এবং তিনি বাংলাদেশের সেরা উইকেট টেকার। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচে তিনি ২১৭ সালে রান করেন এটি হলো তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান এবং পুরো বাংলাদেশ খেলোয়ারদের এটি হলো সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। ২০১৮ সালে তিনি বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ম্যাচে ২০০ উইকেট নেন তিনি হলেন প্রথম খেলোয়ার যে বাংলাদেশের হয়ে এই কৃতিত্ব অর্জন করে। তিনি হলেন প্রথম খেলোয়ার যে বিশ্বকাপে ১০০০ রান এবং ৩০ টি উইকেট নেন। আর ২০০৭ সালের সেই বিশ্বকাপ ম্যাচ যেখানে বাংলাদেশ ভারতকে গ্রুপ স্টেজে হারিয়েছিল এবং ওই ম্যাচেও শাকিব আল হাসান অর্ধশত রান করেছিল।
২০০৯ সালে তিনি মাশরাফি মুর্তজা আনফিট হওয়ার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর বিরুদ্ধে শাকিব আল হাসান কে বাংলাদেশ টিমের অধিনায়ক বানানো হয় ওই সিরিজ বাংলাদেশ জিতে যাই এবং এটি হলো বাংলাদেশের এক মাত্র জিত দেশের বাইরে। এই সিরিজ বাংলাদেশ ২-০ তে জিতে ছিল। এরপর ওয়ান ডে সেরিবেশ বাংলাদেশ ৩-০ তে জিতে যাই। এই সিরিজে শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) ম্যান অফ দ্য সিরিজ হন। তিনি হলো একমাত্র বাংলাদেশী প্লেয়ার যে কাউন্টি ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান। শাকিব আল হাসান বিয়ে করেন বাংলাদেশী আমেরিকান মেয়ে উম্মি আহম্মদ শিশিরকে তিনি হলো গ্রীন কার্ড হোল্ডার।