বরগুনার বেতাগীতে বেড়িবাঁেধর বাইরে তরমুজ খেত জোযার পানিতে প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় তরমুজ চাষী আব্দুর রাজ্জাক(৪৮) ও তোফাজ্জেলে(৩৪) ‘র স্বপ্ন ভেঙে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালী এলাকায় পূর্ণিমার প্রভাবে গত ৪ দিন ধরে জোযারের ২ থেকে ৩ ফুট পানিতে প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমির তরমুজ খেত নষ্ট হয়েছে। এতে কৃষকের প্রায় ২৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানায়, বেরিবাঁধের বাইরে হলেও এখানটায় এবারে জমিতে তরমুজের ফলন ভাল হয়েছে। এ বছর ফলন ভালো, দাম ও ভালো রয়েছে। মহামরী করোণার প্রভাবে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই এবারেও চরম ক্ষতিরমুখে পড়লো। সরকারি হিসেবে এ উপজেলায় এ বছরে ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়। এরমধ্যে বিবিচিনি ইউনিয়নের পুটিয়াখালীর চরে ১২ হেক্টর, দেশান্তরকাঠীতে ১০ হেক্টর, সরিষামুড়িসহ অন্যান্য ইউনিয়নে ৮ হেক্টর। তবে বেসরকারি হিসেবে এর পরিমান আরও বেশি। গড়িয়া বুনিয়া তরমুজ চাষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জমি লীজ নিয়ে এবছর ১৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কৃষি ব্যাংক থেকে ঋন ও ধারদেনা করে খরচ যুগিয়েছি। আগামী দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পর তরমুজ গুলো বিক্রি করতে পারতাম। কিন্ত গত বুধবার হঠাৎ করে বিষখালী নদীতে জেয়ারের পানি বেড়ে গিয়ে তরমুজ খেত তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।’ তরমুজ খেতের ছবি তুলতে গেলে এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ‘আমার সব কিছু শেষ‘, এ আক্ষেপ করে তরমুজ খেতে নেমে হেঁটে হেঁটে নস্ট হওয়া গাছ ও তরমুজ গুলো নাড়া চাড়া করে তিনি আরও বলেন, এখন দেনা কীভাবে শোধ করব সেই দুশ্চিন্তায় আছি।’ পুটিয়াখালী গ্রামের তরমুজ চাষী তোফাজ্জেলে বরেন,‘ পানি উঠে খেত সরমুজ নস্ট হওয়ায় এবারে তাদের যে পরিমানে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠার নয়। বেতাগী পৌর শহরের তরমুজ বিক্রেতা সেলিম মিয়া জানান, এ বছর তরমুজেল ফলন ও দাম দুইটাই ভালো। বড় সাইজের তরমুজ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, মাঝারি সাইজের তরমুজ আর ছোট সাইজের তরমুজ ১০ থেকে ২০ টাকায় পাইকারি কেনাবেচা হচ্ছে। ভালো দামে কৃষকরাও খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: ইকবাল হোসেন বলেন, তাদের হিসেবে এ উপজেলায় এবারে ৩০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। সবকিছু অনুকুলে থাকলে চাষীরা আর্থিক ভাবে প্রচুর পরিমানে লাভবান হতে পারতো। কিন্ত বেড়িবাঁেধর বাইরে কৃষকদের খেত পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাদের পাশে দাড়াঁতে প্রণোদনার আওতায় আনাসহ সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করা হবে।