বরগুনার বেতাগীতে হু হু করে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জনবল ও স্থান সংকট, আইভি স্যালাইনের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন দ্রুত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতাল কম্পাউন্ড, মেঝে ও সিঁড়িতেও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। সোমবার (১৯ এপ্রিল) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় নতুন করে বলইবুনিয়ার আহম্মেদ হাওলাদার (৬৫) সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ শত ১৪ জন ডায়রিয়া রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩৯ জন। ভর্তি আছেন ৭৫ জন। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ছবি মন্ডল জানান, গত শুক্রবার থেকে গড়ে প্রতিদিনই ৫০-৬০ জন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। তবে দিন দিন সংখ্যা বেড়েই চলছে। বেসরকারি হিসেবে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি। করোণা আতঙ্ক ও এমনিতেই হাসপতালে জায়গা নেই। তাই অনেকেই বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জায়গার অভাবে বেডের বাইরে বারান্দায় বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার লক্ষীপুরা গ্রামের শিশু মুবিন। তার মা আয়শা বেগম জানান, এখানে দুর্ভোগের শেষ নেই। চিকিৎসকরা কাকে রেখে কাকে দেখবেনে বলাই মুশকিল। ছেলের আশঙ্কা জনক অবস্থা তাই না থেকে উপায় নেই। এরই মধ্য আইভি স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাইরের ফার্মেসি থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর জন্য স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। এই সুযোগে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কোম্পানীর লোকজন চড়া দামে কলেরা স্যালাইন বিক্রিরিএমনও অভিযোগ রয়েছে।সাধারণ রোগীরা হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ ও সেবা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আশার কথা ইতোমধ্যে বরগুনার মহিলা সংসদ সদস্য নাদিরা সুলতানা’র পক্ষ থেকে ৩ শত এবং বেতাগী উপজেলা পরিষদ’র পক্ষ থেকে ৩ শত কলেরা স্যালাইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও স্বাস্থ অধিদপ্তর ৭ হাজার কলেরা স্যালাইন এবং ৩০ হাজার ওআরএস বরাদ্ধ দিয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রলায়ের অতিরিক্ত সচিব মো: রেজাউল করিম এমনটাই নিশ্চিত করেন। তবে কবে নাগাদ এ স্যালইন পৌছবে তা এখনো নিশ্চিত নয় জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তেন মং। স্থানীয়রা জানায়, এখন চড়া দামেও স্যালাইন মিলছেনা। বেতাগী পৌর শহরের পাইকারী ওষুধ বিক্রেতা রনজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, গত মঙ্গলবার থেকে ৪-৫ দিন ধরে আইভি স্যালাইনের তীব্র সংকট চলছে। স্যালাইনের জন্য মানুষ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। উল্লেখযোগ্য কোম্পানীর বরিশাল ডিপোতেও চাহিদাপত্র দিয়েও স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছেনা। মানুষ এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। কষ্টের কথা স্যালাইনের সংকট থাকায় এর আগেও যার ৫টি দরকার ছিল। তাকে ১টি দিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।