টাঙ্গাইলের বাসাইলে ৪০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত একটি কালভার্ট দুই বছরের মধ্যেই হেলে পড়েছে। কালভার্ট হেলে পড়লেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। উল্টো ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করে একইস্থানে নতুন আরেকটি কালভার্ট তৈরির প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাঞ্চনপুর পশ্চিমপাড়া এলাকায়। জানা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে কাঞ্চনপুর-নাটিয়াপাড়া ও হালুয়াপাড়া গ্রোথ সেন্টার থেকে কাজিরাপাড়া সড়কের পশ্চিমপাড়া এলাকায় এলজিইডির তত্বাবধায়নে ১৩.১ মিটার দৈর্ঘ ও ৫.৫ মিটার প্রস্থ কালভার্টটি নির্মাণ করে মেসার্স এসকে টিম্বার নামের ঠিকাদারি একটি প্রতিষ্ঠান। কালভার্টটির ব্যায় ধরা হয় প্রায় ৪০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর। কাজের শুরু থেকেই নি¤œমানের সাগ্রমী দিয়ে নির্মাণের অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয়রা। নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে কালভার্টটি নির্মাণ করায় দুই বছর যেতে না যেতেই গত বর্ষায় হেলে পড়েছে কালভার্টটি। বর্তমানে কালভার্টটি পরিত্যাক্ত। সম্প্রতি কালভার্টটি চলাচলের উপযোগী করার জন্য শিকল টেনে ও নানা দেশীয় পদ্ধতি ব্যবহার করেও সোজা করতে ব্যর্থ হয়েছে স্থানীয়রা। কালভার্টটি হেলে পড়ায় আগামী বর্ষায় ওই অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয়রা কালভার্টের পরিবর্তে বড় ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান। এদিকে একই সময়ে কালভার্টটির সাথে ১৮০ মিটার পাকা সড়ক সংযুক্ত করে ৫৩ লাখ টাকা ব্যায়ে কাজটি করা হয়। এরই মধ্যেই সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে আবার মেরামতের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন অর রশিদ খানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এখানে একটি ব্রিজের খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কালভার্ট নির্মাণ করে। কালভার্ট নির্মাণ করার কারনে সেখানে নৌকা চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। কালভার্টটি গত বর্ষায় হেলে পড়েছে। বর্তমানে কালভার্টটি পরিত্যাক্ত। এ অবস্থায় শিকল টেনে কালভার্টটি সোজা করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। এ এলাকায় কালভার্টের পরিবর্তে বড় একটি ব্রিজ নির্মাণ হলে ভালো হত। বর্ষায় নৌকাও চলাচল করতে পারতো।’ এ প্রসঙ্গে জানতে মেসার্স এসকে টিম্বার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সুনিল বসাকের সাথে মুটোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। উপজেলা এলজিইডি কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজেদুল আলম বলেন, ‘একটি কালভার্ট ও ১৮০ মিটার পাকা সড়ক ৫৩ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের দুই বছরের মাথায় বন্যার পানির ¯্রােতে কালভার্টটি হেলে পড়েছে। কালভার্ট তৈরিতে কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। এখানে নতুন আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।’