ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার গজারিয়া গ্রামের ইটালী প্রবাসী চাঞ্চল্যকর মাসুদ হত্যা মামলার প্রধান আসামীরা আটক না হওয়ায় পরিবার ও এলাকাবাসীর মাঝে অসন্তষ দেখা দিয়েছে। ২ সপ্তাহ পার হলেও আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে ফাঁসির দাবী করেছেন নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী। তবে নিহতের পরিবারের অভিযোগ এখন পর্যন্ত প্রধান হত্যাকারী বাচ্চুমিয়া তার ২ পুত্র সন্ত্রাসী রিজু, মিজু, জামাতা জুয়েল, পিন্স, সহিদ, কিবরিয়া, নান্নু, তুরফান, সবুজ, খাজা, বাবু সহ আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় অসন্তস প্রকাশ করেছেন। মামলা ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়ি পাশে নওপাড়া বাসষ্টান্ডে নান্নুর দোকানে চা খেতে যায় ইটালী প্রবাসী মাসুদ রানা। ঐ দিন দুপুরে প্রিন্স বেপোরোয়া গতিতে মটর সাইকেল চালানোর নিশেধ করায় ক্ষিপ্ত হয়। পরে এঘটনাকে কেন্দ্রে করে প্রিন্স তার মাদবর বাচ্ছুমিয়ার কাছে বিচার চায়। ঐ আক্রোশের সুত্র ধরে প্রধান আসামী এমদাদুল হক বাচ্চুমিয়া নেতৃত্বে তার ২ পুত্র, পিন্স ও তার জামাতা সহ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য মাসুদ রানাকে চায়ের দোকানে কুপিয়ে হত্যা করে। পরদিন বুধবার ময়না তদন্তের পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের মা হালিমা বেগম বাদি হয়ে ৩৫ জন সহ আরো অজ্ঞাত ৫/৬ কে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর ছুটে আসেন, মাননীয় এমপি নিক্সন চৌধরী ও ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং পরিবারের প্রতি সমবেধনা সহ ও আসামসীদের আটক করে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আফরোজা রোজি মুঠোফোনে জানায়, আমার স্বামী মাসুদ রানা অত্যান্ত নিরহ ও ভদ্রলোক। সে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে ইটালীতে বসবাস করছেন। গত ৩ মাস আগে সে আমাদেরকে ইটালীতে রেখে ছুটিতে বাড়ি যায়। পৌর নির্বাচনের পর ২০ এপ্রিল মাসুদের ইটালী ফেরার কথা ছিল। কিন্ত তার ফেরার আগেই ঘাতকেরা আমার স্বামীকে হত্যা করে। আমি প্রধান হত্যাকারী বাচ্চু, রিজু, মিজু, জুয়েল, প্রিন্স সহ সকল আসামীদের ফাঁসি দাবী করছি। নিহতের ভাই আছাদ জানান, ইতিপুর্বে বাচ্চুমিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ সহ তার ছেলেরা মাদক ব্যবসা সহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। মাসুদরানা অপকর্ম সহ মাদকের বিরোধিতা করায় আমার ভাইকে তাহারা প্রকাশ্য হত্যা করে। আমি তাদেরকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী করছি। তিনি এসময়ে আক্ষেপ করে বলেন, প্রায় ২ সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুল আসামীরা প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরেই রয়ে গেল। গজারিয়া গ্রামের সোহেল রানা জানান, বাচ্চুর ২ ছেলে ও তার জামাতা জুয়েল এবং পিন্স মাদক সেবন ও বিক্রির সাথে জড়িত। ঘটনার দিন রাতে পুলিশের অভিযান চালিয়ে বাচ্চুর বাড়ি থেকে মাদক সেবনের সারজান উদ্বার করে। এরা এলাকার সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক, সব সময়ে এলাকায় ধাংগা হাংগামা করে থাকতো। তাদেও অত্যাচারে এলাকাবাসী জিম্মি হয়ে থাকতো। ঐ গ্রামের আনোয়ার জানান, মাসুদরানা এলাকার মধ্যে একজন দানবির লোক ছিলেন, গ্রামবাসীকে অনেক দান করতো এবং আমার মেযের বিয়েতে সব খরচ মাসুদ দিয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার এসআই আজাদ জানান, আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। আশা করছি আসামীদের দ্রুত আটক করতে সক্ষম হব। এঘটনায় এই পর্যন্ত ৩ জন আসামীকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।