করোনা পরে এবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমণ ও মৃতুর ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকটি। বাংলাদেশে ছড়িয়ে না পড়লেও, ভারতে করোনার পাশাপাশি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসও মারাত্মক আকার ধারণ করছে।
প্রথমেই জেনে নিন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কী? চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগকে চিহ্নিত করা হচ্ছে মিউকোরমাইকোসিস নামে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে শরীরে বাসা বাঁধে এই ছত্রাক। করোনা রোগীরা বেশি দিন আইসিইউ-তে থাকলে, কিংবা তাদের উপরে স্টেরয়েডের ব্যবহার বেশি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এক্ষেত্রে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ঢুকে পড়ছে শরীরে। জানা গেছে, করানায় আক্রান্তরাই এখন পর্যন্ত বেশি মাত্রায় এই ছত্রাকে সংক্রমিত হয়েছেন। করোনার মতোই মুখ দিয়ে প্রবেশ করে এই ভাইরাস। তাই মুখের ভেতর জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে সবাইকে। ক্যান্সার ও ডায়াবেটিসে আক্রান্তরাই ব্র্যাক ফাঙ্গাসে বেশি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। শুধু যে করোনা রোগীর শরীরেই এই রোগ বাসা বাঁধবে, তা কিন্তু নয়। এটি একটি বিরল সংক্রমণ। বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে, করোনা অতিমারি ছড়ানোর আগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ দেখা যেত এক লাখে মানুষের মধ্যে এক জনের শরীরে। এই রোগে মৃত্যুর হার যথেষ্ট বেশি। ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
কেন এমন ভয়াবহ হয়ে উঠছে এই ভাইরাস? এই বিষয়ে ভারতীয় নাক-কান-গলার চিকিৎসক বা ইএনটি চিরজিৎ দত্তের মতে, আমাদের মুখে প্রায় ২৫০০ জীবাণু সবসমেই থাকে। তাদের সঙ্গে আমরা খুব সহজেই মানিয়ে নিচ্ছি। যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম; তারাই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতো ছত্রাক সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের উপসর্গ: সাইনাস, মস্তিষ্ক আর ফুসফুসে মূলত ছড়ায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ। তবে কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যনালী, চামড়া এবং অন্যান্য অঙ্গেও এর প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। নাকের উপরে কালো ছোপ, দেখতে অসুবিধা হওয়া, নাক বন্ধ, সর্দি সবই এই রোগের লক্ষণ। সঙ্গে নাক দিয়ে কালচে কফ বের হয়। নাকের ভিতরের অংশ কালচে রঙের হয়ে যায়। মুখ ও গালে ব্যথা। কারও কারও ক্ষেত্রে সে সব অংশ অবশ হয়ে যায়। সংক্রমণ বেশি ছড়ালে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, এই জাতীয় ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সবারই কিছু সাধারণ নিয়ম মনে চলা উচিত। সাধারণ কয়েকটি নিয়ম মানলেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
দিনে ২ বার ভালো করে দাঁত মাজা, ২ বার মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করা, আর মুখের ভিতর যাতে শুকিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। মুখ শুকিয়ে গেলেই অল্প করে পানি খেতে হবে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদেরকে অতিরিক্ত সচেতন হতে হবে। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া/ইন্ডিয়া টাইমস