সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

বরিশাল নদী বন্দরের পণ্টুনে যাত্রীদের পদচারণা শুরু

শামীম আহমেদ বরিশাল প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ মে, ২০২১

বৈশ্বিক মহামারি কোভিড (১৯) করোনার দ্বীতিয় ডেউয়ের ছোবলে দেশের দ্বীতিয় বৃহত্তম বরিশাল নৌ- বন্দরের পল্টুনে দ্বীপ জেলা ভোলা সহ বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলার অভ্যন্তরীন নৌ-পথের মহিলা-পুরুষ ও শিশু যাত্রীরা লঞ্চযোগে বরিশালে ফিরে আসতে শুরু করেছে। অন্যদিকে বরিশাল থেকেও বিভিন্ন নৌ-পথের যাত্রীরা অভ্যন্তরীন নৌ-পথের যাত্রীরাও বরিশাল ত্যাগ করতে দেখা যায়। তবে দীর্ঘদিন পর লঞ্চ চলাচল শুরু হলেও লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের তেমন লক্ষনীয় চাপ চোখে পড়েনি। বরিশাল ত্যাগ করা লঞ্চগুলোতে যাত্রী উঠানোর সময় প্রতিটি যাত্রীর হ্যান্ডওয়াস জীবানুনাশক স্প্রে করে উঠাতে দেখা যায়। এসময় অভ্যন্তরীন লঞ্চগুলোর খালাশীরা বলেন প্রায় ভাই দেড় বেকার হয়ে পড়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করেছি। না খেয়ে যত কষ্ট যতটা কষ্ট পেয়েছি তার চেয়ে বেশি খারাপ লেগেছে বসে থাকতে থাকতে এক রকম শরীর অলস হয়ে পড়ছিল যা পরবর্তী কাজ করতে অসবিদায় পড়তে হত আর কয়েকদিন গেলে। আবার কাজে যোগ দিয়ে সিড়ি উঠাচ্ছি। নতুন করে লঞ্চ বাদিংয়ের জন্য কাচি খুলছি আবার বাদতে ভাল লাগছে। অপরদিকে বরিশাল-ঢাকা নৌ পথের লঞ্চ অফিস কর্তৃপক্ষরা বলেন এখন পর্যন্ত ঢাকাগামী লঞ্চের কেবিনের চাহিদা আছে তবে চাপ নেই আগের মত। দীর্ঘ দেড়মাস পর সোমবার (২৪) মে, থেকে আবারও বরিশাল-ঢাকা নৌরু টসহ সারা দেশে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল শুরু কতরেছে। রবিবার সরকারি ঘোষণার পরপরই বরিশাল নদী বন্দরে নোঙ্গর করে রাখা যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো ধোয়া মোছা ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে কাজ শেষ করেছে। এদিকে ছুটিতে থাকা কর্মীচারীদের দ্রুত কর্মস্থলে ফিরতে বলা হয়। দীর্ঘ ৪৬ দিন পর লঞ্চ চালুর খবরে আনন্দের বন্যা বইছে বরিশাল নদী বন্দরের নৌযান শ্রমিকদের মাঝে। তবে করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বরিশাল নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ। লঞ্চ মালিক-শ্রমিক এবং সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের পরামর্শ দিয়েছেন সুশীল সমাজের নেতারা। করোনা সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল থেকে সরকার সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে। পরদিন ৬ এপ্রিল থেকে সারা দেশে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে নৌযান শ্রমিকরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছিল গত দেড় মাস ধরে। লঞ্চ চালুর দাবিতে তারা বরিশাল এবং চাঁদপুর নদী বন্দরে বিক্ষোভ করে। লঞ্চ মালিকরাও গত শনিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে লঞ্চ চালুর দাবি জানান। মালিক-শ্রমিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার এক ঘোষণায় সোমবার থেকে সারা দেশে যাত্রীবাহি নৌযান চালুর ঘোষণা দেয়। এ সংবাদের আনন্দের জোয়ার বইছে বরিশাল নদী বন্দরের শ্রমিক-মালিকদের মাঝে। সরকারি ঘোষনার পরপরই নদী বন্দরে নোঙ্গর করা রাখা নৌযানগুলো ধোয়া মোছার কাজ শুর হয়। বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া শ্রমিকদেরও দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজে যোগ দিতে বলা হয়। লঞ্চ চালু হলে শ্রমিকরা কোনমতে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবে বলে জানান নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন বরিশালের সভাপতি আবুল হাসেম মাস্টার। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক ও নদী বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সোমবার থেকে যাত্রীবাহী নৌযান চালুর সরকারি সিদ্ধান্তের খবর তিনি শুনেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে লঞ্চ চলাচল করে সেই ব্যবস্থা কথা বলেন তিনি। এদিকে বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, দীর্ঘ দেড় মাস পর যাত্রীবাহী লঞ্চ চালুর খবর নিঃসন্দেহে স্বস্তির। তবে মালিক-শ্রমিক এবং বিআইডব্লিউটিএ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য হলে আবারও করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে হুশিয়ারী দেন তিনি। বরিশাল-ঢাকা রুট সহ সারা দেশে যাত্রীবাহী ৭শ’ নৌযান রয়েছে। এতে কাজ করছে অন্তত ২০ হাজার নৌযান শ্রমিক।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com