ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় বিশখালি নদীতে বেড়িবাঁধ না থাকায় ঘূর্নিঝড় ইয়াস’র শংকায় আতংকে কাটছে নদী তীরবর্তী ১৫ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের। বেড়িবাঁধের অপেক্ষায় জেলার উপকূলীয় কাঁঠালিয়া উপজেলাবাসীর ৫০ বছর কেটে গেছে। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা ও আম্ফানে জেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলা কাঁঠালিয়া। বাঁধ না থাকায় প্রতি বছর জলোচ্ছ্বাসে ফসল ও মৎস্য সম্পদের ব্যপক ক্ষতি হয়। এ উপজেলার বিভিন্নস্থান ঘুরে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, বেড়িবাঁধ না থাকায় সিডরে এ উপজেলায় ২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঘূর্ণিঝড় আইলা ও আম্ফানে আঘাতহানে এখানে। কোন প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বিশখালি নদীতে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভেসে যায় জেলেদের জাল, নৌকা। তলিয়ে যায় মাছের ঘের ও ছোট-বড় পুকুর। নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কাঁচা আধা কাঁচা ঘর-বাড়ি ও ফসলের ক্ষেত।এছাড়াও নিয়মিত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার হেক্টর জমি। বিশখালি নদীর নোনা পানিতে আমুয়া, হেতালবুনিয়া, মশাবুনিয়া, চিংড়াখালী, জয়খালী, কাঁঠালিয়া সদর, কচুয়া, শৌলজালিয়া, রঘুয়ার চর, রঘুয়ারদড়ি চর, তালগাছিয়া, আওরাবুনিয়া ও জাঙ্গালিয়াসহ প্রায় ১৫টি গ্রাম প্রতিদিন স্বাভাবিক জোয়ারে ফসলি মাঠ প্লাবিত হচ্ছে। স্থানীয় জেলে মিরন জোমাদ্দার বলেন, বইন্যার (সিডর) সময় গলা পর্যন্ত পানিতে মোগো ঘর দরজা গরু বাছুর সব ভাসাইয়্যা লইয়্যা গ্যাছে। আইলায় ও কম অয়নায় পানি। ঘুর্নিঝড় আম্ফানে কাঠালিয়া লঞ্চঘাট এলাকা ও জয়খালী গ্রামের প্রায় তিন কিলোমিটার অস্থায়ী বাঁধ ভেঙ্গে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা শহরসহ কমপক্ষে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়। বেরিবাঁধের দাবীতে তখন স্থানীয় জনসাধারণ বিশখালি নদীর পাড়ে মানববন্ধন করেন এবং স্বেচ্ছাশ্রমে এক কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ভাঙন রোধে তাৎক্ষনিক কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ব্যবস্থা করেন। কচুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম আমিরুল ইসলাম লিটন সিকদার বলেন, বেড়িবাঁধ না হওয়ায় আমরা বন্যার সময় খুবই অসহায় অবস্থার সন্মুখীন হই। ঘর-বাড়ি আর কৃষির ক্ষতি হইতেছে। কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, বাঁধ না থাকায় বন্যা জলোচ্ছ্বোস ছাড়াও প্রতিদিন স্বাভাবিক জোয়ারে বিশখালি নদীর পানি প্রবেশ করে তলিয়ে যাচ্ছে প্রায় হাজার হাজার হেক্টর আবাদী জমি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ এমাদুল হক মনির বলেন, উপজেলাবাসির দীর্ঘ দিনের দাবি এ বেড়িবাঁধ নির্মানের। বাঁধটি নির্মাণ করে জনসাধারণকে নিরাপদে রাখা সরকারের দায়িত্ব। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটি নির্মানের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।