ইসলামে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মোহাম্মদ সা:-এর প্রতি ভালোবাসা। রাসূলুল্লাহ সা:-এর মুহাব্বতের চেয়ে বড় কোনো জিনিস নেই। ইশকে রাসূল সা: হলো ঈমানের মূল ভিত্তি।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন মাজিদে এরশাদ করে বলেন, ‘হে নবী আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো তাহলে আমার অনুসরণ করো। আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন। তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন, আল্লাহ তায়ালা ক্ষমাকারী ও দয়ালু ( সূরা আলে ইমরান আয়াত ২০)।
ওই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, বান্দাহ যদি আল্লাহকে ভালোবাসার দাবি করে তাহলে পূর্বশর্ত হলো নবী মোহাম্মদ সা:-এর অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সা:-এর সুন্নতের অনুসরণ করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হলো রাসূলুল্লাহ সা:-কে ভালোবাসার মানদ- কিরূপ হবে? সেই ভালোবাসার পদ্ধতিইবা কী?
রাসূল সা:-এর প্রতি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা ছিল সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে। রাসূলের প্রতি সাহাবিদের যে ভালোবাসা ছিল তাই ছিল সত্যিকারের ভালোবাসা। সাহাবিদের পদ্ধতি ব্যতিরেকে অন্য কোনো পদ্ধতিতে ভালোবাসলে তা সত্যিকার অর্থের ভালোবাসা হবে না। সাহাবায়ে কেরামগণ রাসূলুল্লাহ সা:-এর পদাঙ্ক অনুসরণের ক্ষেত্রে নিজের শেষ রক্তবিন্দুটুকু বিলিয়ে দিয়ে রাসূলের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
শুধু রাসূলের প্রশংসা করার দ্বারাই এশকে রাসূলের প্রমাণ বহন করে না। এশকে রাসূল প্রমাণ করতে হলে প্রয়োজন নিজের বাস্তব জীবনে রাসূলুল্লাহ সা:-এর সুন্নতকে পরিপূর্ণরূপে অনুসরণ করা।
সুন্নত তিন প্রকার, এক. কওলী সুন্নত, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সা: যেসব কথা বলেছেন এবং যেসব নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলোকে বলা হয় কওলী সুন্নত।
দুই. ফে’লী সুন্নত, অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সা: যেই পদ্ধতিতে কাজ করেছেন সেই পদ্ধতি অনুযায়ী কাজ করার নাম হলো ফে’লী সুন্নত।
তিন. তাকরিরী সুন্নত, অর্থাৎ যেসব বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা: কোনো কওল (বাণী) বা ফে’ল (কর্ম) নেই, কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সা:-এর সামনে কোনো কাজ করেছেন, সেই কাজে রাসূলুল্লাহ সা: কোনোরূপ বাধা প্রদান করেননি সেটাকে বলে তাকরিরী সুন্নত।
যে মুমিন মুসলমানগণ উল্লিখিত তিনটি সুন্নতের উপর আমল করবে সে-ই প্রকৃত আশেকে রাসূল। এই তিন পদ্ধতির বাইরে অন্য কোনো পদ্ধতিতে নিজেকে আশেকে রাসূল দাবি করলেই সে আশেকে রাসূল হয়ে যাবে না।
মূল কথা হলো ইত্তেবায়ে রাসূল সা: তথা রাসূলের অনুসরণের নামই হলো আশেকে রাসূল হওয়া।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে রাসূলুল্লাহ সা:-এর অনুসরণের মাধ্যমে প্রকৃত আশেকে রাসূল হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন। লেখক : নাজিমে দারুল ইকামাহ, জামিয়া কুরআনিয়া সৈয়দুন্নেছা ও কারিগরি শিক্ষালয়,