জমিতে ফসল আবাদের পরিবর্তে পুকুর কেটে মাছ চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন শরীয়তপুরের কৃষক। মৎস্য বিভাগ এতে সহযোগিতা জোগালেও কৃষি বিভাগ খাদ্য উৎপাদন ঝুঁকির মধ্যে পড়ার আশঙ্কা করছে। কৃষি বিভাগ বলছে, দিনদিন আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিবে।ফসলী জমি কেটে পুকুর খনন করার খবর পেলে আমরা সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করছি। এব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। সরেজমিন গিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার ছয়টি উপজেলার সবকটিতে ফসলি জমিতে বড় বড় পুকুর খনন করা হচ্ছে। এ চিত্র সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে শরীয়তপুরের বিস্তৃীর্ণ এলাকাজুড়ে জমি কেটে মাছের খামার তৈরি করা হচ্ছে। বেশিরভাগ খামার চালাচ্ছেন স্থানীয় যুবকরা। তারা সমবায় পদ্ধতিতে মাছ চাষে বেশি উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। জাজিরা উপজেলায় এর পরিমাণ তুলনামূলক কম।সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের সেলিম সরদার,রাজ্জাক সরদারসহ কয়েকজন মৎস্যচাষী জানান তিনি চার বছর আগেও কৃষিকাজ করতেন। ধান চাষে কৃষি শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাই মাছ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে জমির পুকুরে মাছ চাষ করে বছরে খরচ বাদে লাখ লাখ টাকা লাভবান হচেছন। নড়িয়া উপজেলার আচুড়া গ্রামের মোশারফ হোসেন ও কালু সিকদার জানান, ১১ জন মিলে ১১০ বিঘা জমিতে একটি দিঘি খনন করে মাছের খামার করছেন। ভেদরগঞ্জের ছয়গাও গ্রামের কৃষক মিয়া মোহাম্মদ বলেন, ছয় একর জমিতে ধান চাষ করে কয়েক বছর ধরে লোকসান দিচ্ছেন। বর্তমানে ওই জমিতে মাছের চাষ করে ভালো লাভবান হচ্ছেন। এব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকার বলেন, ধান উৎপাদন থেকে মাছ চাষে অধিক লাভ হওয়ায় অনেক কৃষক ধান বাদ দিয়ে মাছ চাষে এগিয়ে আসছেন। আগে যে জমিতে ধান চাষ হতো, এখন তারা সেখানে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। ধান চাষ করে যে লাভ হয়, মাছ চাষে তার থেকে চারগুণ পর্যন্ত বেশি লাভ হয়। যারা মাছ চাষে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষন দেয়া হবে। আর তাদের জন্য করনীয় সব কিছু করা হবে। এ ব্যাপারে শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আমীর হামজা বলেন, দিনদিন চাষের জমি কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে জেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিবে। আর ফসলী জমি কেটে পুকুর খনন করার খবর পেলে আমরা সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করছি। এব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে।