উন্নয়ন ও কারিগরি সহায়তা মিলিয়ে বর্তমানে সারা দেশে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ২১২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। করোনা মহামারীতে সরকার আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে কেবল বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোই চালু রাখার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি। বাকি প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্থানীয়ভাবে কয়েকটির কাজ চললেও বন্ধ রয়েছে বেশির ভাগ প্রকল্প। মহামারীর কারণে এমনিতেই বাস্তবায়নে পিছিয়ে থাকা এসব প্রকল্পের কাজ আরো পিছিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন সংস্থাটির প্রকৌশলীরা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে বর্তমানে ১২টি বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্প চলমান আছে। এর মধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক উন্নয়ন ও দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতুগুলো পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে।
বৈদেশিক ঋণে বাস্তবায়নাধীন অন্য প্রকল্পগুলো হলো ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, সাসেক রোড কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-১ (ইমপ্রুভমেন্ট অব জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ), সাসেক রোড কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট-২ (এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ), রাজাপুর-নৈকাঠী-বেকুটিয়া-পিরোজপুর সড়কের (জেড-৮৭০২) ১২তম কিলোমিটারে বেকুটিয়ায় কচা নদীর ওপর অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, ক্রস বর্ডার নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট, গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (বিআরটি গাজীপুর-বিমানবন্দর), মাতারবাড়ী কয়লানির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের জন্য সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ প্রকল্প।
বিদেশী ঋণে বাস্তবায়নাধীন এসব প্রকল্পের কাজ চলমান লকডাউনের মধ্যেও চালিয়ে যাওয়ার জন্য প্রকল্প কর্মকর্তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছে সওজ। পাশাপাশি প্রকল্পের কর্মীদের কাজে সহায়তার জন্য স্থানীয় প্রশাসনেরও সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এর বাইরে সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ প্রকল্পটির কাজ চালু রাখতে নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ২১২টি প্রকল্পের বিপরীতে ১৫ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত বছর করোনা মহামারীর কারণে বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজই লক্ষ্য অনুযায়ী এগিয়ে নিতে পারেনি সংস্থাটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সবুর বণিক বার্তাকে বলেন, বর্ষাকালে এমনিতেই সড়ক উন্নয়নকাজ করা যায় না। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চলমান বিধিনিষেধ। তবে এসব বিধিনিষেধের মধ্যেও যেন গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চালু রাখা হয়, সেজন্য আমরা প্রকল্পের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। নির্দেশনা অনুযায়ী এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কাজ করতে গিয়ে কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, তারা কাজ করে যাচ্ছেন। কাজ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাচ্ছেন তারা। তার পরও সার্বিকভাবে করোনা মহামারীর কারণে চলমান প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কিছুটা হলেও বিঘিœত হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি।