নারী-পুরুষের আজীবন একসঙ্গে পথ চলার বাস্তব ইচ্ছেটাই ‘বিয়ে’। আবার একসঙ্গে না থাকার যে ইচ্ছে সেটার চূড়ান্ত রূপ সেটা হলো ‘ডিভোর্স’। ডিভোর্স বা তালাক শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এক অদ্ভুত খারাপ লাগা। বর্তমান সময়ে এর প্রকোপ অনেকটাই বেড়ে গেছে। আজকাল ডিভোর্স যেন এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। ডিভোর্সের প্রবণতা সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়ছে মহামারীর মতো। এর মাধ্যমে যারা সমাধান খুজেন তারা আসলে আরো অনিশ্চিত জীবনের পথে পা বাড়ান। তাই আসুন এই সমস্যার কারণগুলো জেনে ভালবাসার বন্ধনে জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর উদ্যোগ নেই।
ডিভোর্সের সংখ্যা বাড়ার উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ-
মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন: এক্ষেত্রে কমবেশি উভয়ই ভুক্তভোগী হয়ে থাকে। ছেলেরা মেয়েদের দ্বারা শারীরিকভাবে নির্যাতিত না হলেও আজকাল নারীদের দ্বারা অনেক পুরুষরাই মানসিকভাবে নির্যাতিত হয়ে থাকে। অপরদিকে নারীরা পুরুষদের দ্বারা সবসময়ই মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়ে থাকেন। অনেক সময় এই নির্যাতনের শিকার হয়েই অবশেষে ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা।
পরকীয়া: বর্তমান সময়ের ডিভোর্সের অনেক বড় কারণ হলো এই পরকীয়া। এই সমস্যা নারী-পুরুষ দুজনের মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়। বিবাহের পূর্বে থাকা সম্পর্ক, নিজেদের মধ্যে বনিবনা না হওয়া, পছন্দ-অপছন্দের তারতম্য থাকাসহ আরো নানা কারণে নারী-পুরুষরা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক অথাৎ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে এটাই ডিভোর্সের অন্যতম কারণ হয়ে দাড়ায়।
আতœনির্ভরশীলতা: আজকাল আর কোনো নারীকে কোনো পুরুষের উপর নির্ভর করে চলতে হয় না। এখনকার নারীরা বেশ আতœনির্ভর। কোনো কারণে স্বামীর সাথে বনিবনা না হলে খুব সহজেই ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্তে পৌঁছে যায় তারা।
অর্থের অভাব: বর্তমান সময়ে টিকে থাকতে হলে অর্থের গুরুত্ব অনেক। ‘কথায় আছে, টাকা না থাকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়।’ কথাটি অযৌক্তিক নয়। বর্তমানে অনেক ডিভোর্সই হয়ে থাকে স্বামীর অস্বচ্ছলতায় সংসারে অভাব-অনটন ও অশান্তির কারণে।
যৌতুক: যৌতুক আমাদের দেশের আরেকটি সামাজিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে আরেকটি। এই প্রবণতা শিক্ষিত আর অশিক্ষিত বা গ্রাম/শহর নয়, পুরো দেশ জুড়েই রয়েছে প্রকোপ। যৌতুক আদায়ের মাধ্যম হিসেবে স্বামী, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি স্বামীর পরিবার হতে লাঞ্চিত, নির্যাতিত হয়ে ধৈর্য হারিয়ে অবশেষে ডির্ভোর্সের পথ বেছে নেন অনেকেই।
সোশ্যাল মিডিয়া:আমরা আজকাল কমবেশি সবাই এই ব্যাপারটার সাথে জড়িত। অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরিবারের দিকে মনযোগ হারিয়ে ফেলছেন। কেউ ডুবে যাচ্ছেন রঙিন দুনিয়ায়, ভুলে যাচ্ছেন বাস্তবতা। কেউ কাউকে সময় দিচ্ছে না। এসব নানা কারণে ডিভোর্সের সংখ্যা বাড়ছে।