নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার চরম অবহেলায় এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা বারবার সংঘটিত হচ্ছে এবং শিশু-কিশোরসহ অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। তিনি বলেন, প্রকৃত পক্ষে এই ঘটনাটি হত্যার পর্যায়ে পড়ে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংশ্লিষ্ট সংস্থা কল-কারখানার নির্মাণ মান, পরিবেশ এবং অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, নিয়মিত পরিদর্শন ও নজরদারি না করার কারনে এবং প্রশাসনিক দূর্বলতার কারণে এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ড সংঘটিত হয়েছে। গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসকল কথা বলেন। এর আগে শনিবার দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, এই দূর্ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে এবং দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবী জানায়। সভায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের যথাযথ ক্ষতি পূরণের আহ্বান জানানো হয়। সভায় করোনা মহামারী সারাদেশে ভয়াবহ আকারে বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন জেলা গুলিতে বিশেষ করে খুলনা বিভাগ, রাজশাহী বিভাগ, রংপুর বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিভাগে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসায় ব্যাপক অব্যবস্থাপনা বিশেষ করে, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে বহু রোগী ন্যূনতম চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সভায় চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন অব্যাহত রাখার পক্ষে দলবাজ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্যে করোনার চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা মনে করে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি শুধুমাত্র তাদের সরকারী দলের বশংবদ প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করার জন্য।
২০১৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল উপ নির্বাচন এবং সকল স্থানীয় নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হয়েছে। জনগণের অংশ গ্রহণ ব্যতিরেখেই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের সংবিধান লংঘন করে শুধু মাত্র সরকারী দলকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য জনগণের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। বর্তমানে দেশের গণতন্ত্রহীনতা, জনগণের সার্বভৌমত্ব হরণ এবং ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া, একদলীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা আওয়ামী লীগের নীল নকশা বাস্তবায়নের প্রধান অংশীদার হয়েছে। সংবিধান ও জনগণের প্রতি কোনো দায়-দায়িত্ব না থাকার কারণে এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য তাদের পক্ষে করা সম্ভব বলে সভা মনে করে। সভায় নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে জনগণের স্বাস্থ্যর সুরক্ষার জন্য নির্বাচন স্থগিত রাখার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় এর দায় দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে গ্রহণ করতে হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।