দীর্ঘ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় পঙ্গু ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি খাত। তবে দেশটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জ্বালানি তেল খাতে ঘুরে দাঁড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বৃদ্ধি করছে। জুনে রফতানি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৬৬ শতাংশ।
ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত অপরিশোধিত জ্বালানি কেন্দ্র পিডিভিএসএ জানায়, চলতি বছরের জুনে ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে উচ্চমানের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রিও। দেশটির জ্বালানি তেলের প্রধান গন্তব্য ছিল এশিয়া মহাদেশের দেশগুলো। এর মধ্যে ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন।
চীন জ্বালানি পণ্য আমদানিতে নতুন শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে। এর প্রভাবে ভেনিজুয়েলার রফতানিকারকরা চীনে জ্বালানি পণ্যের বিক্রি অতি দ্রুত বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে মালয়েশিয়া হয়ে চীনের বাজারে ঢুকছে ভেনিজুয়েলার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন শুল্কের কারণে জ্বালানি পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়েছে ৪০ শতাংশ। ব্যয় কমাতে মালয়েশিয়ার বিটুমিন মিশ্রিত হয়ে রফতানি করা হচ্ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ভেনিজুয়েলার জ্বালানি তেল খাতের জন্য সবচেয়ে বড় সংকটের বছর ছিল ২০১৯। ওই বছরের শুরুর দিকে দেশটির জ্বালানি তেল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় একদিকে দেশটির খনিগুলো থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন কমতে শুরু করে, অন্যদিকে কমে আসে জ্বালানি পণ্যটির রফতানিও। ফলে দেশটি জ্বালানি পণ্যের রফতানি বাজার থেকে ছিটকে পড়ে। গত বছর দেশটির জ্বালানি তেল ও পরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্য রফতানি ৭৭ বছরের সর্বনি¤েœ নেমে যায়।
ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত অপরিশোধিত জ্বালানি কেন্দ্র পিডিভিএসএ জুনে সব মিলিয়ে দৈনিক ৬ লাখ ৩১ হাজার ৯০০ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করেছে। পাশাপাশি ২৩টি জাহাজে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলজাত পণ্য রফতানি করা হয়েছে। রফতানি মে মাসের তুলনায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং গত বছরের জুনের তুলনায় ৬৬ শতাংশ বেড়েছে।
কয়েক সপ্তাহ আগে ভেনিজুয়েলার জ্বালানি তেলবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী তারেক এল আসামি জ্বালানি তেল উত্তোলন বৃদ্ধির উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন। চলতি বছরের শেষ নাগাদ লাতিন আমেরিকার দেশটি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন চারগুণ বাড়াবে। এ সময় উত্তোলন দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেলে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত রয়েছে দেশটির।