বিশ্ববাজার থেকে সবচেয়ে বেশি পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল আমদানি করে ভারত। দেশটি গত জুনে এসব ভোজ্যতেল আমদানি কমিয়েছে। মূলত আমদানি শুল্ক হ্রাসের দাবিতে পরিশোধকরা পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল আমদানি বন্ধ রাখার কারণেই আমদানি কমেছে। ভারতের খাতসংশ্লিষ্টরা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্স ও বিজনেস রেকর্ডার।
ভারতে সর্বাধিক পাম অয়েল সরবরাহকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া। দেশটিতে সয়াবিন ও সূর্যমুখীসহ অন্যান্য ভোজ্যতেল সরবরাহ করে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইউক্রেন ও রাশিয়া।
সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন ইন্ডিয়া (এসইএ) এক বিবৃতিতে জানায়, গত মাসে ভারতের পাম অয়েল আমদানি মে মাসের তুলনায় ২৪ শতাংশ কমেছে। এ সময় আমদানি করা হয় ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৪৬৭ টন পাম অয়েল। অন্যদিকে জুনে সয়াবিন তেল আমদানি আগের মাসের তুলনায় কমেছে ২৩ শতাংশ। এ সময় আমদানি করা হয় ২ লাখ ৬২ হাজার ৬২ টন। তবে গত মাসে সূর্যমুখী তেল আমদানি প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। মে মাসে পণ্যটি আমদানি করা হয় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৯ টন। জুনে আমদানির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার ৭০২ টন।
একটি বৈশ্বিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মুম্বাইভিত্তিক ভোজ্যতেলের ডিলার জানান, ভারত সরকার ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে আমদানি শুল্ক কমাবে, এমন প্রত্যাশায় গত মাসে ভোজ্যতেল পরিশোধকরা আমদানি স্থগিত রাখেন। এ কারণেই আমদানির পরিমাণ কমেছে। এদিকে শুল্ক কমানোয় চলতি মাসে আমদানি আবারো বেড়েছে।
ভারত সাধারণত অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি করে। তবে গত মাসের শেষ সপ্তাহে দেশটি পরিশোধিত পাম অয়েল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। পাশাপাশি অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে।
বিজনেস রেকর্ডার জানায়, ভারতে করোনার নতুন ধরন আঘাত হানার পর থেকেই দেশটিতে জ্বালানি তেলের দাম চড়া। একই সঙ্গে বাড়ছে ভোজ্যতেলের দামও। মহামারীতে মানুষের আয় কমে যাওয়ায় এসব পণ্য ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। দেশীয় বাজারে ভোজ্যতেলের দামে লাগাম টানতেই আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। ফলে চলতি মাসে পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল আমদানি জুনের তুলনায় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি কমানোয় পাম অয়েল ক্রয়ে আমদানিকারকদের মাঝে আগ্রাসী মনোভাব দেখা দিয়েছে। অতিরিক্ত পাম অয়েল কিনে মজুদ করছেন তারা। ফলে এ মাসে আমদানিতে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমদানি করা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন পাম অয়েল।