শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৫ অপরাহ্ন

লকডাউন শিথিল : ব্যাপক যানজট যশোরে প্রথমদিনেই মানুষের ঢল

যশোর প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই, ২০২১

টানা ১৪ দিন পর যশোরের মানুষ যেন বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছে! সোমবার সকালে শহরের দৃশ্য সেটিই জানান দেয়। মুক্ত বাতাসে ঘুরতে দলে দলে মানুষ শহরে আসে। কিছুদিন ধরে ঢুকতে না পারা রিকশা আর ইজিবাইকও পাল্লা দিয়ে প্রবেশ করে শহরে। এ যেন স্বাভাবিক সময়! ঈদের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সকলে। যশোরে যে করোনা মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে, প্রতিদিন শ’শ’ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে ১০ জনেরও বেশি-এটি যেন কারো স্মরণে ছিল না। সবাই ছুটেছে যে যার মতো। কেনাকাটা করে পাল্লা দিয়ে। শহরের অধিকাংশ সড়কে ছিল ব্যাপক যানজট। দুপুর ১২ টা। শহরের এইচএমএম রোড ছিল লোকে লোকারণ্য। পা ফেলার জায়গা ছিল না। যেন মানুষের ¯্রােত যাচ্ছিল। এই সড়কের সকল দোকানপাট খোলা ছিল। যে যার মতো কেনাকাটায় ব্যস্ত দেখা যায় করোনায় ভয়ডরহীন মানুষের। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক থাকলেও দোকানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন কোনো ব্যবস্থা ছিল না। আবুল কাশেম নামে একব্যক্তির কাছে জানতে চাওয়া হয় করোনার মধ্যে কেন তিনি বাজারে এসেছেন। তার জবাব ছিল,‘অনেকদিন সবকিছু বন্ধ ছিল। প্রয়োজনীয় অনেক জিনিসপত্র কিনতে পারিনি। তাই কিনতে এসেছি। করোনার কারণে ঘরে বসে থাকলেতো সংসার চলবে না।’ অ্যালমুনিয়ামের হাড়ি-কড়াই ক্রেতা নাজমুন্নাহার বলেন,‘হাড়ি-কড়াই কিনতে এসেছি।’ করোনার মধ্যে এগুলো না কিনলে কি নয়-এমন প্রশ্নে তার জবাব ‘আল্লাহ ভরসা।’ বেলা ১২ টা ২৭। অবস্থান ছিল মুজিব সড়কে। মানুষে ঠাসা ছিল সড়কটির একাংশ। এই সড়কের পাশের কালেক্টরেট মার্কেটে ছিল উপচেপড়া ভিড়। রিকশা-ইজিবাইকও ছিল চোখেপড়ার মতো। সালমা নামে এক নারীর সাথে কথা হয় এই মার্কেটে। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় করোনার মধ্যে কেন বাজারে এসেছেন। উত্তরে তিনি বলেন,‘এতদিনতো আসিনি। লকডাউন উঠে গেছে তাই এসেছি।’ শাহাজান নামে আরেক ব্যক্তি বলেন,‘খেতে দেয়ার নামে খোঁজ নেই আবার যত কথা।’ তিনিও ছিট কাপড় কেনাকাটা করেন। মুজিব সড়ক থেকে গন্তব্য ছিল চৌরাস্তা। গাড়িখানায় পৌঁছে মানুষজন আটকে যায় তীব্র যানজটে। চিত্রামোড় থেকে আরএন রোড পর্যন্ত ছিল ভয়াবহ যানজট। দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয় রিকশা ও ইজিবাইক যাত্রীদের। গরমের মধ্যে তারা অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ সময় এই সড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচলও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। রেলরোড এবং মাইকপট্টি সড়কের অবস্থাও একই রকম ছিল। তীব্র যানজটে নাকাল ছিল এসব সড়কের পথচারীরা। মণিহারের সামনে ছিল আরও ভয়াবহ যানজট। এতো গেল সড়কের চিত্র। মার্কেটের চিত্র ছিল আরও করুন। মানুষ গাদাগাদি করে কেনাকাটায় ব্যস্ত ছিল। বেশিরভাগ দোকানে ছিল উপচেপড়া ভিড়। প্রায়সব মার্কেটে একই অবস্থা দেখা যায়। জুতা, কসমেটিকস, মুদি বাজার সব মার্কেটে ক্রেতায় ঠাসা ছিল। শহরের অবস্থা দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, যশোরে করোনায় প্রতিদিন অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন শ’শ’ মানুষ যে আক্রান্ত হচ্ছে সেটিও কেউ আমলে নেয়নি। আব্দুস সালাম নামে একব্যক্তি বলেন,‘লকডাউন শিথিল করার কারণে শহরে যেভাবে মানুষের ঢল নেমেছে তাতে করে করোনায় আক্রান্ত হতে বাকি আছে যারা তারাও আক্রান্ত হবে।’ লকডাউন শিথিল করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com