দেশের বাস্তবতায় করোনা মোকাবিলায় লকডাউন বা কারফিউ কোন সমাধান নয়। বিধিনিষেধ দিয়ে মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। একই সঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি জোরদার করে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। বিবৃতিতে জিএম কাদের বলেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় লকডাউন সফল হবে না। লকডাউন চলছে, কিন্তু মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, জরিপ অনুযায়ী করোনায় এক বছরে দেশের প্রায় আড়াই কোটি মানুষের জীবনমান নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গেছে। আর আগে থেকেই দরিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন আরও সাড়ে ৩ কোটি মানুষ। বেশিরভাগ দরিদ্র মানুষের ঘরে খাবার নেই, পকেটে ওষুধ-শিশু খাদ্য কেনার পয়সা নেই। এ ধরনের মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। জি এম কাদের আরো বলেন, লকডাউন চলছে কিন্তু প্রতিদিন সরকারি হিসাবেই প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এখন মৃত্যু হচ্ছে প্রতিদিন দুই শতাধিক মানুষের। সাধারণ মানুষের ধারণা, এই সংখ্যা আরও বেশি। করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুহার ঊর্ধ্বগামী এবং সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ বা কারণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে বাস্তবে লকডাউনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। কিন্তু খেটে খাওয়া মানুষের দুঃখ-দুর্দশা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। প্রতিদিন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে তাদের আহাজারি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সরকারের তরফ থেকে যে সাহায্য দেওয়া হচ্ছে তা একদিকে অত্যন্ত অপ্রতুল এবং একইসঙ্গে এর একটি বড় অংশ প্রকৃত দরিদ্রদের হাতে পৌঁছাচ্ছে না। তাই আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় লকডাউন ও কারফিউ কোনো সমাধান দিতে সক্ষম হচ্ছে না। গণহারে সবাইকে ভ্যাকসিন প্রয়োগের কার্যক্রম জোরদার করে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। তাহলেই জনগণের জীবনে স্বস্তি আসবে ও তাদের জীবন রক্ষা পাবে।