পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। এরপর লকডাউনের কারণে শহরে ফেরা হয়নি তার। তবে আগামী সপ্তাহে ঢাকা ফিরবেন তরুণ সম্ভাবনাময়ী অভিনেত্রী মাখনুন সুলতানা মাহিমা। এরমধ্যে ঈদে প্রচার হয়েছে তার দুটি নাটক ‘শান্তি নিবাস’ ও ‘পাবজি’; এগুলোতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন এফ এস নাঈম ও মিশু সাব্বির। প্রচারের পর নাটকগুলো থেকে বেশ ভালো সাড়া পেয়েছেন বলেই জানান তিনি। তিনি বলেন, এই ঈদে খুব একটা কাজ করা হয়নি। তারপরও দুটো কাজ থেকে ভালো ভালো মন্তব্য পেয়েছি। তাছাড়া দুজন সিনিয়র শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে নতুন অনেক কিছু শিখেছি। এটাই অনেক। সামনের কাজ প্রসঙ্গে মাহিমা বলেন, বেশ কয়েকটা কাজের বিষয়ে কথা হচ্ছে কিন্ত আমি ঈদের আগে যে বাড়ি এসেছিলাম, লকডাউনের কারণে আর ঢাকায় ফিরতে পারিনি। লকডাউন শেষ হলে তবে ফিরবো এরপর নতুন কিছু কাজ করবো।
ক্যারিয়ারের অল্প সময়েই দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন। কেমন উপভোগ করছেন? তার ভাষ্য, আলহামদুলিল্লাহ! কতটা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছি, সে হিসেব করবো না। মানুষরা আমার কাজ দেখছেন, প্রশংসা করছেন; এতেই আমি আনন্দিত হচ্ছি। সহশিল্পী, নির্মাতা সিনিয়ররা প্রতি মুহূর্তে উৎসাহ দিচ্ছেন, ভুল থাকলে সেগুলো ধরিয়ে দিচ্ছেন। একজন নতুন এবং জুনিয়র শিল্পী হিসেবে এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। এদিক থেকে আমি অনেক ভাগ্যবতী যে সবার অনেক সহযোগিতা পাচ্ছি, ভালোবাসা পাচ্ছি। আর দর্শকের প্রতি মুহূর্তে নানারকম পজেটিভ মন্তব্যগুলোকে ভালোবাসা হিসেবেই দেখছি। এতটুকু সময়েই যে ভালোবাসা পেয়েছি এটাই অনেক-কৃতজ্ঞতা সবার প্রতি। অভিনয় দিয়ে শুরু, এরপর মডেলিং। এখন নাটকে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। কী মনে হচ্ছে, যেখান থেকে শুরু করেছিলেন নিজেকে ই¤প্রুভ করতে পেরেছেন? মাহিমার স্পষ্ট জবাব, সত্যি বলতে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার জায়গাটা হচ্ছে অভিনয়। অভিনয়ের দিকেই আমার আগ্রহটা বেশি। যে কারণে মাঝখানে কিছুটা সময় বিরতি দিয়ে আবারও অভিনয়ে ফিরেছি। ফিরে বেশ কিছু ভালো ভালো কাজ করেছি সেগুলো দর্শকরা পছন্দও করেছেন। নানা মুহূর্তে তারা সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন প্রশংসাসূচক মন্তব্যও করেছেন।
আর ভালো করছি কি না বা ই¤প্রুভ হচ্ছে কি না সেটা আসলে আমি বলারও কেউ না, এটা দর্শকরা ভালো বলতে পারবে। কারণ- আমি এখনও অনেক ছোট। কাজ বিচার করার মতো যোগ্যতা বা সাহস কোনোটাই হয়নি আমার। আমি শুধু আমার কাজটা মনযোগ দিয়ে করার চেষ্টা করি। আমার কোনো কাজ যখন প্রচার হয় তখন সেটা দেখি এবং সেখানে নিজের অনেক ভুল খুঁজে পাই। তখন মনে হয় এই জায়গাটাই এরকম না ওরকম করে করলে হয়তো আরও ভালো হতো। এরকম খুটিনাটি অনেক ভুলই চোখে পড়ে। তারপর সেগুলো শুধরে পরবর্তী কাজগুলো আরও ভালো করার চেষ্টা করি। নিজের কাজ বিচার করতে গেলে শুধু ভুলগুলোই চোখে পড়ে। তখন মনে হয়, আরও ভালো করে কাজ করতে হবে। আমি সবসময় চেষ্টা থাকে আমার করা আগের কাজটার থেকে যেন পরের কাজটা ভালো করতে পারি। প্রতিটা কাজের আগে এটাই মাথায় রাখি।
তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত থাকায় অভিনয় নিয়ে জড়তা নেই। তবে মাঝেমাঝে একটু জড়তা অনুভব করি, যখন অনেক সিনিয়র শিল্পীরা থাকেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিখছি এবং শিখে যেতে চাই। আমার অভিনয়ের স্কুলিংটা হয়েছে মাবরুর রশীদ বান্নাহ ভাইয়ের হাত ধরে। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি আমি। সেগুলোই কাজে লাগানের চেষ্টা করছি। অভিনয়ের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বিশেষ শিশুদের জন্য কাজ করতে চান মাহিমা। তাদের প্রতি একটা দুর্বলতা কাজ করে এ অভিনেত্রীর। শিশুদের জন্য কিছু করতে পারলে তার ভালো লাগবে বলেই জানান। উল্লেখ্য, ‘রঙঢঙ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে ৫ বছর আগে শোবিজে নাম লিখিয়েছিলেন মাখনুন সুলতানা মাহিমা। আহসান সারোয়ার পরিচালিত এ ছবিটির শুটিং শেষ হলেও পরে আর তা মুক্তি পায়নি। তবে ছবিটির ‘বয়স ষোলোতে প্রেম’ গানটি মুক্তি পেলে তা দর্শকমহলে দারুণ সাড়া ফেলে। গানটি দিয়ে পরিচিতি পেতে শুরু করেন এ অভিনেত্রী।
এরপর মাঝে কয়েকবছর অভিনয়ে দেখা না গেলেও নিয়মিত ‘খেয়ালী’ গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের শেষের দিকে মাবরুর রশীদ বান্নাহ পরিচালিত ‘কল্প তরুর গল্প’ নাটক দিয়ে আবারও অভিনয়ে ফিরেন মাহিমা। এরপর একাধারে ২০টিরও বেশি নাটক, ৫/৬টি বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবে কাজ করেন। একটু একটু করে দর্শকমহলে পরিচিতি বাড়তে থাকে তার। ‘বদমাইশ পোলাপাইন’ ওয়েব সিরিজের দুই সিরিজ দিয়ে দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পান। সেইসাথে গেল ঈদে সঞ্জয় সমদ্দার পরিচালিত ‘মরণোত্তম’ দিয়ে ব্যাপক সাড়া পান।-বাংলাদেশ জার্নাল