সাকিব আল হাসান ‘বাংলাদেশের প্রাণ’, ‘সাকিব ভাল খেললে জেতে বাংলাদেশ, আর খারাপ খেললে, সাকিবের বাজে দিনে পারে না বাংলদেশ।’ শুনতে একটু একপেশে মনে হয়। কিন্তু সেটাই সত্য। ধ্রুবতারার মত সত্য সাকিব জ্বলে উঠলেই শেষ হাসি হাসে বাংলাদেশ। গত ৯ আগস্ট, সোমবার আরও একবার সে সত্যের দেখা মিললো। শেরে বাংলায় ব্যাট হাতে (২০ বলে ১১) তেমন কিছু করতে না পারলেও বল হাতে অসাধারণ পারফরম করেছেন সাকিব। ৩.৪ ওভারে ৯ রানে দখল করেছেন ৪ উইকেট। সাকিবের স্পিন ঘূর্ণিতেই মাত্র ৬২ রানে অলআউট অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ পেল ৬০ রানের বিরাট জয়। দিনটি ছিল আসলে সাকিবেরই । সিরিজে প্রথম ম্যান অফ দ্য ম্যাচ, সিরিজ সেরা পারফরমার হওয়া আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথম অলরাউন্ডার হিসেবে এক হাজার রান ও ১০০ উইকেট শিকারির অনন্য কৃতিত্ব অর্জন। অথচ ঠিক আগের ম্যাচেই সাকিব ভাল করতে পারেননি। ব্যাট হাতে ৫৭.৬৯ স্ট্রাইকরেটে ২৬ বলে ১৫ রান করার পর বল হাতে একটি উইকেটও পাননি। উল্টো এক ওভারে ৫ ছক্কা হজম এবং ৪ ওভারে ৫০ রান দিয়ে সমালোচনার খোরাক হন সাকিব। কেউ কেউ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ৩ উইকেটের হারের জন্য সাকিবকে দায়ী করতেও দ্বিধা করেননি।
কিন্তু একদিন বিরতির পর আজ আবার সেই পুরোন সাকিবের দেখা মিললো। তিনি জানেন, কিভাবে ফিরে আসতে হয়। কিভাবে বাজে সময় পেছনে ফেলে ভালো সময় টেনে আনা যায়। মাঝে কিছুদিন দাড়ি রেখেছিলেন সাকিব। আজ মাঠে নেমেছিলেন দাড়ি কেটে ক্লিন শেভ হয়ে। মুখায়ব ও মুখশ্রির মত, চ্যাম্পিয়ন অলরাউন্ডারের মাঠের পারফরমেন্সটাও ততোধিক উজ্জ্বল।
শেষ খবর, ৯ রানে ৪ উইকেট শিকারের নগদ পুরস্কার পেয়েছেন সাকিব। শেষ ম্যাচে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ। এছাড়া এক ম্যাচ বাদ দিয়ে সিরিজের বাকি ৪ ম্যাচে ব্যাট ও বল হাতে সমান দ্যুতি ছড়িয়ে ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্টও হয়েছেন সাকিব। সমালোচকদের কেউ কেউ বলেছিলেন, আগের তিন ম্যাচের একটিতেও ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হননি সাকিব। হ্যাঁ, সত্য। এই ম্যাচের আগে সিরিজে একবারের জন্যও ম্যাচ সেরার পুরস্কার হাতে ওঠেনি তার হাতে। আর সিরিজ শেষে তার হাতে শেষ ম্যাচের সেরা ও ম্যান অফ দ্য সিরিজের পুরষ্কার।
প্রথম ম্যাচে দলের টপ স্কোরার (৩৩ বলে ৩৬) ছিলেন সাকিব। পাশাপাশি একদম নিয়ন্ত্রিত বোলিংও (১/২৪) করেছিলেন। দ্বিতীয় ম্যাচেও আবার একদম মাপা বোলিং (৪ ওভারে ১/২২) করে অসিদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখা এবং ১৭ বলে ২৬ রান করে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে দিলেন।
তৃতীয় ম্যাচেও ১৭ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে শুরুর ধাক্কা সামলে দেয়া এবং বল হাতে ২২ রানে এক উইকেট শিকার করে অসিদের ১১৭ রানে বেঁধে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। আর শেষ ম্যাচে গত সোমবার সিরিজ সেরা বোলিং স্পেল উপহার দিয়ে বাজিমাত করলেন। সত্যিই সাকিব ‘চ্যাম্পিয়ন’ অলরাউন্ডার। তার বল ও ব্যাট টিম বাংলাদেশের সেরা সম্পদ। বিরাট শক্তি।-জাগোনিউজ২৪.কম