সস্প্রতি রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যখন দ্রুত বাড়ছে তখন এডিস মশার লার্ভা নিয়ে নতুন তথ্য জানালেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তার ভাষ্য, রাজধানীতে উচ্চশিক্ষিত অনেকের বাড়িতে এডিস মশার প্রচুর লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রথম দফায় লার্ভা ধ্বংসের পরে আবার পরীক্ষা করে দেখতে গেলে সেসব জায়গায় বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গতকাল বুধবার (২৫ আগস্ট) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষের বাড়িতে হিউজ (প্রচুর) লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে আমাদের সিটি করপোরেশনের লোকজন জোর করে গিয়ে অভিযান চালিয়ে লার্ভা ধ্বংস করে দিয়ে আসলো। আবার ১৫ দিন পর চেক করার জন্য গেলে, তারা বাধা দিচ্ছে। কারা এটা করেছে, তাদের নাম আমি বলবো না। এরপর দেখা গেল, ওইসব বাসায় তিনগুণ লার্ভা পাওয়া গেল। এটা খুবই অস্বস্তিকর। আমরা তো এটা আশা করতে পারি না। তাজুল ইসলাম বলেন, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর নয়, আমরা ইন্ট্রিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট করতে যাচ্ছি। এটার জন্য কাজ চলছে। সারাদেশের জন্য এটা করবো।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে ভরসার জায়গা হলো গ্রামে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম। যেখানে নিচে মাটি আছে, সেখানে মশা ডিম পাড়লেও তা ফুটবে না। পরিবেশের যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সেটা মাথায় রেখেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় গ্লোবাল সিনারিও (বৈশ্বিক চিত্র) অনুযায়ী আমাদের অবস্থা (ডেঙ্গু পরিস্থিতি) মন্দের ভালো। একটা সন্তুষ্টির জায়গা হলো, আমরা এই পর্যায় পর্যন্ত রাখতে পেরেছি। বৃষ্টি বেশি হলে সমস্যা না, যদি ভারি বৃষ্টি হয়। তবে থেমে থেমে বৃষ্টি হলে, পানি জমা থাকলেই সমস্যা।
তাজুল ইসলাম বলেন, যদি ছাদ বাগান করেন তাহলে ফুলের টবের মধ্যে কয়েক ফোঁটা কেরোসিন তেল দিয়ে দেন। এর ফলে প্রতিদিন পানি সরাতে হবে না। কেরোসিন দিলে সেখানে লার্ভা হবে না। আগে একটা কোম্পানি কীটনাশক আমদানি করতো। এখন ওপেন করে দেয়া হয়েছে। এখন কিছু বেসরকারি কোম্পানি সেই কীটনাশক আনছে, সেগুলো দোকানে দোকানে বিক্রির ব্যবস্থা করবো। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরও বলেন, গত বছর বাংলাদেশে এক হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। এবার গতবারের সংখ্যা অতিক্রম করেছে, অনেক আক্রান্ত হয়েছে। মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম (ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন), গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, স্থাস্থ্যসেবা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।